জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ছাত্রদলের ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ঘোষণা দেন। তবে প্যানেল ঘোষণার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শাখা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। পরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠন করা হয় ‘জাগ্রত জবিয়ান’ নামে ছাত্রদলের আরেকটি প্যানেল। এদিকে সংগঠনে নিজেদের মধ্যে এমন দৃশ্যমান কোন্দল দলের জন্য সুখকর নয় এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা নিয়েও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শহীদ সাজিদ ভবনে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে প্যানেলের ঘোষণা দেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা জানান, এ প্যানেলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক। জিএস পদে লড়ছেন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ চৌধুরী এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান আকন। বাকি পদগুলোতেও পর্যায়ক্রমে অংশ নিচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিত ও অবদান রাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এজিএস প্রার্থী মেহেদী হাসান আখন বলেন, ‘গত বছরগুলোতে আমাদের অনেক কর্মী অন্যায়ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জকসু নির্বাচন তাদের আত্মমর্যাদা পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ। আমরা চাই এ নির্বাচনে জবিয়ানদের বাস্তব সমস্যা- বাসস্থান, নিরাপত্তা, লাইব্রেরি, ছাত্র অধিকার এসব ইস্যুগুলো সামনে আসুক। আমাদের প্যানেল সেই ইস্যুগুলোকেই অগ্রাধিকার দেবে।’
জিএস প্রার্থী মো: তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরিবর্তন চায় ও যোগ্য নেতৃত্ব চায়। বাইরে থেকে এনে নেতৃত্ব চাপিয়ে দিলে তা ছাত্রসমাজ কখনোই গ্রহণ করবে না। আমরা এমন একটি প্যানেল দিতে চাই, যা সত্যিকারের জবিয়ান ও সংগঠনের ভেতর থেকে উঠে আসা ছাত্রনেতাদের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
ভিপি প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় বরং ন্যায় প্রতিষ্ঠার পক্ষে। মূল প্যানেলে যেসব ত্যাগী ও নির্যাতিত ভাইদের রাখা হয়েছে, আমরা তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সেই পদগুলোতে প্রার্থী দিচ্ছি না। তবে বাইরে থেকে আসা অনেককে যেভাবে বসানো হয়েছে, এটি সংগঠনের প্রতি অবিচার। এ অবিচারের প্রতিকারেই আমরা বিকল্প প্যানেল ঘোষণা করেছি।’
উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২৬৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ১৭ ও ১৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল, ১৯ ও ২০ নভেম্বর বাছাই এবং ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এছাড়া ২৪-২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি সম্পন্ন হবে, ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট এবং ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। পরে ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে, যা পরদিন (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হবে। এরপর ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে নির্বাচনী প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও সেদিনই ভোট গণনা সম্পন্ন হবে। সর্বশেষ ২২ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।



