জবিতে দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে ‘রান উইথ শিবির’

‘চলো একসাথে হাঁটি, একসাথে দেশ গড়ি’ স্লোগানকে ধারণ করে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

নুর আলম, জবি সংবাদদাতা

Location :

Dhaka
রান উইথ শিবিরে দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ
রান উইথ শিবিরে দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ |নয়া দিগন্ত

‘চলো একসাথে হাঁটি, একসাথে দেশ গড়ি’ স্লোগানকে ধারণ করে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়ে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কর্মসূচিটি শুরু হয়।

কর্মসূচিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে কোর্ট এলাকা, রায় সাহেববাজার মোড়, ধোলাইখাল হয়ে ধূপখোলা মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এদিকে কর্মসূচিটিতে অংশ নিতে তিন হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে বলে শাখা সূত্রে জানা যায়।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত সাকিব বলেন, ‘সকালে উঠে রুমমেট এর সাথে বের হলাম। সকাল সকাল ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখি সব পরিচিত মুখ। অসাধারণ! অংশ না নিলে আফসোস করা লাগত! ধন্যবাদ ছাত্রশিবিরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে। অন্য সংগঠনের দিকে তাকিয়ে আছি, এমন প্রোগ্রাম চাই। আমাদের জগন্নাথে বিনোদনের আলাদা ব্যবস্থা নেই। আপনারা এমন উদ্যোগ নিলে আমরা এনজয় করতে পারি।’

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোহতাসিম বিল্লাহ শাহিদী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা। কিন্তু আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালে দেখি, এখানে শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থা নেই। আজকে জবি শিবিরের রান উইথ শিবির কর্মসূচিতে যেভাবে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে, তাতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। তবে শরীরচর্চার কোনো অবকাঠামো এখনো গড়ে তোলা হয়নি।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি সেই দাবি জানান তিনি।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখে আমার কাছে উৎসবমুখর পরিবেশ মনে হয়েছে। আমাদের এ আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার বিকল্প নেই। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ছাত্রশিবির এ ধরনের কর্মসূচি বৃহৎ আকারে আয়োজন করতে পারেনি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পরিবর্তনপরবর্তী সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের জন্য একের পর এক চমৎকার আয়োজন করে চলেছে। আশা করি, এ আয়োজন ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।’

শিবিরের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিগবাতুল্লাহ সিগবা বলেন, ‘এমন একটি আয়োজনের জন্য জবি শিবিরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে এবং এ সঙ্কটে বাংলাদেশের তরুণরাই সবসময় এগিয়ে এসেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি আবারো বাংলাদেশকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, আমাদের তরুণ সমাজ যদি সজাগ থাকে ও ফিট থাকে তবে এ ফ্যাসিবাদী শক্তির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ নেই। একইসাথে যারা আধিপত্যবাদী শক্তি আছে এবং যারা বাংলাদেশে বিদেশী প্রভাব কায়েম করতে চায়—বাংলাদেশের তরুণ সমাজের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানাতে চাই।’

জবি শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুর ইসলাম বলেন, ‘আজকের এ কর্মসূচির মূল প্রতিপাদ্য ‘চলো একসাথে হাঁটি, একসাথে দেশ গড়ি’। আমাদের এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে সুস্থ থাকার বিকল্প নেই। আমাদের এ কর্মসূচিতে তিন হাজারের মতো শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশা করি, জবি শিবির আগামীতেও শিক্ষার্থীদের জন্য আরো কার্যকর ও চমৎকার কর্মসূচির আয়োজন করবে ইনশাআল্লাহ। সেই সকল কর্মসূচিতে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।’

এ সময় শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি মাকসুদুর রহমান, আসাদুল ইসলাম, শাখা সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল আলিম আরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদ, অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম খলিলসহ সংগঠনের অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।