বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। দেশজুড়ে ইসকন কর্মীদের দ্বারা সঙ্ঘটিত ইমাম অপহরণ, নারী ধর্ষণ, ভাগওয়া ট্র্যাপে মুসলিম নারীদের প্রতারণা, হত্যার হুমকি ও দেশবিরোধী কার্যক্রমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানান তারা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে জুমার নামাজ শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কেআর মার্কেট প্রদক্ষিণ করে জব্বারের মোড়ে এসে শেষে হয়।
সেখানে একটি সমাবেশ আয়োজন করে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় মিছিলে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘এক দুই তিন চার, ইসকন তুই বাংলা ছাড়’, ‘স্বৈরাচারের সঙ্গী, ইসকন তুই জঙ্গি’, ‘ধর্ষকের সঙ্গী, ইসকন তুই জঙ্গি’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘শাহজালালের বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘একশান একশান, ডাইরেক্ট একশান’, ‘ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘বদরের হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার’সহ নানা স্লোগানে ফেটে পড়েন।
সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘ইসকন তার শুরু থেকেই একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে কাজ করছে। তারা ভারতীয় প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গাজীপুরে ১৩ বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণ এবং খতিব অপহরণের ঘটনাসহ নানা অপরাধে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাসহ একাধিক ঘটনায় ইসকন সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।’
বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘ইসকন দিনের পর দিন মানুষ হত্যা করছে এবং ধর্ষণ এর সাথে জড়িত হচ্ছে; কিন্তু প্রশাসনকে কখনো দেখা যায় না ইসকনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, যদি ব্যবস্থা না নিতে পারেন তাহলে চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকেন। যদি আপনার মা-বোনকে ধর্ষণ করলে আপনার গায়ের লোম না দাঁড়ায় তাহলে আপনার চুড়ি পরে বসে থাকাই ভালো। কিন্তু আপনাদের বলতে চাই যদি আপনারা বিচার ব্যবস্থা জোরদার না করেন এবং তাদের গ্রেফতার না করেন তাহলে আমরা আমাদের ব্যবস্থা করবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘কিছু কিছু শিক্ষক ইসকন সদস্যদের টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করছে। তাদের বলতে চাই, যদি আমাদের কাছে এমন কোনো খবর আসে তাহলে কোনো কিছু দেখবো না সবাইকে জব্বারের মোড়ে ঝুলিয়ে রাখব।’
মাহদী নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইসকন একটি আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সঙ্ঘ। যার সাথে হিন্দু ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। অনেক হিন্দু ভাইও ইসকনের বিরুদ্ধে এবং ইসকন বিভিন্ন পূজা-পার্বণে ঝামেলা করে বা পূজা ভেঙে দেয়। ইসকনকে প্রায় সব ঝামেলা ও অপকর্মের পিছনে খুঁজে পাওয়া যায়। সম্প্রতি একজন ইমামকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার পিছনেও ইসকন জড়িত ছিল।’
এছাড়া ইসকন অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে এর কার্যক্রম নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন এবং সংগঠনটিকে ‘নরেন্দ্র মোদির দোসর’ বা ‘দিল্লির দোসর’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে ইস্কনকে নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দেন।



