জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী মন্দিরের অভাব ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১৯ সালে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গাহি সাম্যের গান’ মুক্তমঞ্চের পাশে একটি অস্থায়ী মন্দির নির্মাণ করে দেয়। ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অস্থায়ী মন্দির থাকলেও উঁচু-নিচু ও ঢালু জায়গায় জীর্ণ-শীর্ণ টিনের ঘরের ওপর নির্মিত বলে সেটি বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হতো- এমনটাই হিন্দুধর্মাবলম্বী সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
তবে এবার ভিসি অধ্যাপক ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম নেতৃত্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে স্থায়ীভাবে মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ইন্জিনিয়ারিং দফতর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ইন্সটিটিউট বিল্ডিংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ পার্শ্বে ৩২ ফিট ও ৫০ ফিট বরাবর নির্মিত হবে মন্দিরটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে এ জায়গাতেই মন্দির নির্মিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় চর্চার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সহনশীলতা ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ গঠনে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাহুল রাহা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চাওয়া ছিল একটি স্থায়ী মন্দির নির্মাণ হোক। আমরা জানি একটা কিছু করতে গেলে একটা লং প্রসিডিওরের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবে স্থায়ী জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে মন্দির নির্মাণের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আশাকরি তা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।’
এ বিষয়ে প্রকৌশল দফতরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) স্বপন কুমার শীল বলেন, ‘আমি তো ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরে আছি। আমি আমার কাজ অর্থাৎ নকশা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছি এবং কর্তৃপক্ষকে দেখিয়েছি। বাকি কাজ তো তাদের। অর্থেরও একটা বিষয় আছে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাকিটা করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সনাতন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার বলেন, ‘প্রশাসন মন্দির নির্মাণের একটা উদ্যোগ নিয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর থেকে জেনেছি আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু হবে। যেহেতু প্রশাসন বেশ আন্তরিক। তাই আশা করছি দ্রুততম সময়েই এটার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।’
পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দফতরের পরিচালক প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজেট আসা একটা প্রসিডিওরের বিষয়। মন্দিরের জন্য বাজেটও এখনো আসেনি। তবে সেক্ষেত্রে স্থায়ী জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে টাকা দিয়ে আমরা মন্দিরটা করে দেবো। ইতোমধ্যে ইন্সটিটিউট বিল্ডিংয়ের কনস্ট্রাকশন সাইটের সাথে কথাও হয়েছে। তারা এসে দেখবে এবং শিগগিরই কাজ শুরু করবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু এতদিন এখানে স্থায়ী কোনো মন্দির ছিল না। সেক্ষেত্রে মন্দিরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী স্থায়ীভাবে জায়গা বরাদ্দ হয়েছে। খুব শিগগিরই নির্ধারিত স্থানেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’