শিক্ষা উপদেষ্টা

এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা প্রাপ্য নম্বরই পেয়েছে

শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, এবারের এইচএসসিতে শিক্ষার্থীরা প্রাপ্য নম্বরই পেয়েছে; ফল বাড়িয়ে দেয়া হয়নি, বরং ন্যায্য মূল্যায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার |সংগৃহীত

চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য নম্বরই পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। তবে যারা খারাপ করেছে তাদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা যেটুকু খাতায় লিখবে, তার ভিত্তিতেই প্রকৃত নম্বর দেয়া হবে। কাউকে বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেয়া হবে না।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মূল্যায়নই শিক্ষা বোর্ডগুলোর মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। ফলাফল মানে শুধু পরিসংখ্যান নয়; এটি পরিবারের আশা, পরিশ্রম ও শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের গল্প।

এইচএসসি পরীক্ষায় যারা ভালো ফল করেছে তাদেরকে অভিনন্দন জানান উপদেষ্টা। আর যাদের ফল প্রত্যাশামত হয়নি তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

ড. আবরার জানান, এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল অনেককেই বিস্মিত করেছে। পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কম। এর উত্তর জটিল নয়, অস্বস্তিকর।

তিনি বলেন, দেশের শিক্ষার মূল সঙ্কট প্রাথমিক স্তর থেকেই শুরু হয়। সেই ঘাটতি বছরের পর বছর জমা হয়। দীর্ঘদিন আমরা সেই বাস্তবতার মুখোমুখি হইনি। আমরা এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি যেখানে সংখ্যাই সত্য হয়ে উঠেছে। পাশের হার সেখানে সাফল্যের প্রতীক আর জিপিএ-৫ এর সংখ্যা তৃপ্তির মানদণ্ড।

তিনি বলেন, ‘ভালো’ ফলাফল দেখাতে গিয়ে আমরা অজান্তেই শেখার প্রকৃত সঙ্কট আড়াল করেছি। সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। আমি চাই, শিক্ষা ব্যবস্থা আবারো বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করুক।

উপদেষ্টা বলেন, সকল শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছি ভবিষ্যতে বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়নে, সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি সর্বোচ্চ ন্যায্যতা বজায় রাখতে। একইসাথে ফলাফলের বাস্তবতা বিকৃত যেন না হয় তা খেয়াল রাখতে।

তিনি আরো বলেন, আমরা ‘অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি’ নয়, বরং ‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততা’কে বেছে নিয়েছি। সাহস করে বাস্তবতা স্বীকার না করলে মেধাবী ও আগামী প্রজন্মের প্রতি অন্যায় হবে।

উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডকে তাদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার স্বতন্ত্র পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছি। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করে শেখার মূল ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করবে।

তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় শিক্ষা পরামর্শ সভা আহ্বান করছে। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে শিক্ষক সংগঠনগুলো শতাংশভিত্তিক বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু দাবি তুলেছেন। সরকারের আর্থিক বাস্তবতা অনুযায়ী ৫ শতাংশ বৃদ্ধি (ন্যূনতম ২,০০০ টাকা) বর্তমানে আলোচনাধীন।

নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশে আগামী বছর আরো সম্মানজনক কাঠামোর দিকে যেতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপদেষ্টা আরো জানান, সরকার শতাংশভিত্তিক বাড়িভাড়া বিষয়ে শিক্ষকগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

সূত্র : বাসস