নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) হযরত বিবি খাদিজা হলে হল প্রশাসনের অভিযানকালে রান্নার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে নোবিপ্রবির হযরত বিবি খাদিজা হলে এ অভিযান চালায় হল প্রশাসন। এতে রাইস কুকার, ইন্ডাকশনসহ বিভিন্ন রান্নার সরঞ্জাম পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পরে নোবিপ্রবি ও হল প্রশাসন।
আবাসিক হলগুলোতে পর্যাপ্ত ভর্তুকির অভাব, খাবারের নিম্নমান এবং উচ্চদামেরও তীব্র সমালোচনা করেন তারা। এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, "কর্তৃপক্ষ শুধু ফেইসবুকে বড় বড় রচনা লিখে, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষণের সময় কারো হয় না"।
সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ প্রশাসনের এ অভিযানকে 'লোকদেখানো' হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের যাবতীয় সুবিধা-অসুবিধা দেখভালের দায়িত্ব কি প্রভোস্ট বডির ওপর বর্তায় না?
ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, হল প্রভোস্টদের আরেক নাম 'হাউসটিউটর'। এই দায়িত্বের জন্য তারা একটা সম্মানীও পেয়ে থাকেন। সে হিসেবে নিয়মিত মনিটরিং ছিল তাদের রুটিন ওয়ার্ক। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ জাতীয় বিশেষ অভিযান ছাড়া সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের কোনো সাক্ষাৎ পান না।
নাহিদা ইসলাম নামে এক নারী শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, মুরগীর পিস থেকে পঁচা বাসি গন্ধ পাওয়া যায়। প্রভোস্টরা ক্যান্টিনে অভিযান চালানোর আগে খবর জানিয়ে আসেন। সেদিন রান্না হয় অনেক রকমের আইটেম। প্রভোস্টরাও আরাম করে খেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে চলে যান।
আরেক নারী শিক্ষার্থী ইসরাত ইকরা লিখেন, মুরগির ঝোলে আটার গোলা মেশায় ঘন করতে। আধপঁচা মাছ রসুন দিয়ে রান্না করে, নতুন রেসিপি বলে। ছোটখাটো পোকামাকড় পাওয়াতো অহরহ ব্যাপার। এতসব ফেসিলিটিস এর ঠেলায় মনে হয় হলে নয়, অনাথ আশ্রমে আছি।
এ ব্যাপারে খাদিজা হলের হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, হলে ডাইনিং চালু রয়েছে এবং খাবারের মান মানসম্মত রয়েছে। ইন্ডাকশন ব্যবহার করায় বৈদ্যুতিকভাবে সর্ট সার্কিটের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে হল। তাই পূর্বে নোটিশ দিয়ে হল প্রশাসন রেইড দিয়ে ইন্ডাকশন জব্দ করেছে। আগামী একমাসের মধ্যে হলে গ্যাসের চুলার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা চাই, খাদিজা হলে আর কোনো অগ্নি দুর্ঘটনা না ঘটুক। এটি সম্পূর্ণভাবেই খাদিজা হলের নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য করা হয়েছে।
পূর্বে আবাসিক হলগুলোর ভর্তুকির ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. রেজুয়ানুল হক বলেন, সরকার থেকে খাবারের 'র' ম্যাটেরিয়ালগুলোতে যেমন: চাল, ডাল ইত্যাদিতে ভর্তুকি দেয়ার সিস্টেম নেই। তাই আমরা শুধু বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল এবং লোকবল দিয়ে সাহায্য করতে পারি।