রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়

রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ, মেয়াদ শেষে ডিনের পদ থেকেও পদত্যাগ করল ভিসি : ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য

তবে তারা দু’জনই ফ্যাসিস্ট সরকারের মতাদর্শী ছিলেন এবং তাদের পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আ ফ ম নুরুল কাদের, কুষ্টিয়া

Location :

Kushtia
ভিসি ও রেজিস্ট্রার
ভিসি ও রেজিস্ট্রার |নয়া দিগন্ত

কুষ্টিয়ার রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তার মেয়াদ শেষ করে দায়িত্বরত ডিনের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। একইসাথে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রারও। একসাথে তাদের পদত্যাগ নিয়ে ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তারা দু’জনই ফ্যাসিস্ট সরকারের মতাদর্শী ছিলেন এবং তাদের পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে লিখিত আবেদনে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উভয়ে পদত্যাগ করেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান মোস্তাক জানান, ‘ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য অধ্যাপক জহুরুল ইসলামের মদদে ভিসি ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। ভিসি অধ্যাপক শাজাহান আলী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। এছাড়া রেজিস্ট্রার আব্দুল লতিফ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষের একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ছিলেন। আজ ভিসির মেয়াদের শেষ দিন ছিল। পরে দুপুরে ভিসি ব্যবসায়ী প্রশাসন অনুষদের ডিন থেকে এবং রেজিস্ট্রার স্বপদ থেকে স্বহস্তে স্বাক্ষর করে পদত্যাগ করেছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। ৫ আগস্টের পর জোর করেই ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তারা। আজ ছাত্র শিক্ষকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তারা সেচ্ছ্বায় পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাসিস্টমুক্ত হলো।

বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও ইবি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষক আমেরিকা প্রবাসী অধ্যাপক জহুরুল হক নিজ ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে লিখে জানান, ‘আমার সৃষ্টিতে আজ শকুনের থাবা! আজ আমার শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত! সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন এগুলো সবই ব্যর্থতার নিদর্শন।

এদিকে পদত্যাগ করা ভিসি অধ্যাপক শাজাহান আলী জানান, ‘আজ সোমবার ভিসির মেয়াদের শেষ দিন ছিল। আমি অফিসে ছিলাম, ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্য আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করিয়েছেন।’

জানা যায়, ভিসি তার মেয়াদ শেষ করলেও নিয়ম অনুযায়ী সিনিয়র ডিন হিসেবে আবারো ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব পাওয়ার কথা ছিল তার।

এদিকে পদত্যাগ করা রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ জানান, ‘ছাত্রদলের ছেলেদের দিয়ে কম্পোজ করা আবেদনে স্বাক্ষর করিয়েছেন ট্রাস্টিবোর্ডের কয়েকজন সদস্য।’

উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় জেলার প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০১৫ সালে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন বলে জানা যায়।