বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) চেনা পরিবেশে একদিনের জন্য নেমে আসে শিল্প ও সুরের উচ্ছ্বাস।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় ‘নীরবতায় কলরব ৬.০’-আর্টেক্স: আর্টিস্ট অব বুটেক্সের ধারাবাহিক আয়োজন। এটি কেবল একটি ইভেন্ট নয়, বরং ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এক শিল্প-আন্দোলনের ধারাবাহিক রূপ।
গ্রাফিতি, দেয়ালচিত্র, লাইভ আর্ট ও ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান আত্মপ্রকাশের ভাষা। এবারের আয়োজনের মূল থিম ছিল ‘মিউজিক’। কলরব প্রাঙ্গণের দেয়ালে উঠে আসে বাদ্যযন্ত্র, রঙিন সুরের ঢেউ, আগুনে জ্বলন্ত গিটার, মাইক্রোফোন হাতে কণ্ঠশিল্পীর প্রতিচ্ছবি এবং ব্যান্ডের ছায়ামূর্তি, যা কখনো প্রতিবাদের সুর তোলে, কখনো আনন্দের উচ্ছ্বাসে মাতায়।
দিনভর শিল্পের আবেশে ভরে ওঠে ক্যাম্পাস। রাতের আলো ঝলমলে মঞ্চ যেন দেয়ালচিত্রগুলোকে জীবন্ত করে তোলে। রঙতুলির প্রতিবাদ ও স্বাধীনতার বার্তা এখানে শুধু সৌন্দর্য নয়, বরং সামাজিক সচেতনতার প্রতিচ্ছবি। দেয়ালজুড়ে ফুটে ওঠে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও পরিবর্তনের আহ্বান।
কলরব প্রাঙ্গণ রূপ নেয় এক রঙিন মেলায়। শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ঘুরে ঘুরে দেখেন লাইভ আর্ট, ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী ও ক্যানভাসে বন্দি সৃজনশীলতার অভিব্যক্তি। প্রতিটি কোণ ভরে ওঠে সুরের তরঙ্গে, রঙতুলির নাচনে। ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে শিল্প ও সংগীতের মিলনস্থল।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় নাচ, গান, নাটকের সমাহারে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রাঙ্গণ। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হয় পুরস্কার। রাতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক মিউজিক’-এর লাইভ পারফরম্যান্স। তাদের সুরে দুলেছে হাজারো শিক্ষার্থীর ভিড়, গান গেয়ে মেতেছে পুরো ক্যাম্পাস।
মঞ্চের আলো নিভে এলেও দেয়ালে আঁকা রঙ থেকে ভেসে আসে ক্ষীণ সুর। মনে হয়, নীরবতার গভীরে আসল কলরব এখনো বেঁচে আছে। ‘নীরবতায় কলরব’ তাই কেবল একটি উৎসব নয়, এটি বুটেক্সের শিল্পপ্রেমী তরুণদের আত্মপ্রকাশের মঞ্চ, যেখানে তারা খুঁজে পায় স্বাধীনতার স্বাদ, সৃজনশীলতার মুক্তি এবং ভবিষ্যতের স্বপ্ন।