জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু রোববার

‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মোট ছয়টি শিফটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম তিনটি শিফটে ছাত্রীদের এবং পরবর্তী তিনটি শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা নেয়া হবে।

আতাউর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাবিতে ভর্তি পরিক্ষা শুরু রোববার ২১ ডিসেম্বর
জাবিতে ভর্তি পরিক্ষা শুরু রোববার ২১ ডিসেম্বর |নয়া দিগন্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হবে।

এ বছর মোট সাতটি ইউনিটে এক হাজার ৮৪৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন দু’ লাখ ১৯ হাজার ৩৯৯ জন শিক্ষার্থী। প্রতি আসনের বিপরীতে গড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১১৯ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিচালনা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, প্রথমদিনের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরিক্ষায় (কলা, মানবিক ও আইন) অনুষদে ৪৬৬টি আসনের বিপরীতে ৪৭ হাজার ৪৯৭টি আবেদন জমা পড়েছে, এতে প্রতি আসনে লড়ছেন ১০১ জন।

এছাড়াও ‘এ’ ইউনিটে (গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান) অনুষদে ৪২৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৬০ হাজার ৩৫১টি, যেখানে প্রতি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৪১ জন শিক্ষার্থী।

‘বি’ ইউনিটে (সমাজবিজ্ঞান) অনুষদে ৩২৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২০ হাজার ৫৮৩ জন এবং প্রতি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন ৬৩ জন। ‘সি-১’ ইউনিটে (নাট্যতত্ত্ব ও চারুকলা) অনুষদে ৬৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে তিন হাজার ৭২৫টি, যেখানে প্রতি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন ৫৮ জন।

এদিকে ‘ডি’ ইউনিটে (জীববিজ্ঞান) অনুষদে ৩১০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭০ হাজার ২২০টি, যেখানে প্রতি আসনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২৬ জন শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

অন্যদিকে ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ) অনুষদে ২০০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১১ হাজার ৬১২টি এবং প্রতি আসনে লড়বেন ৫৮ জন। এছাড়া আইবিএ-জেইউ ইউনিটে ৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে পাঁচ হাজার ৪১১টি, যেখানে প্রতি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৯৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মোট ছয়টি শিফটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম তিনটি শিফটে ছাত্রীদের এবং পরবর্তী তিনটি শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা নেয়া হবে।

ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, যাতায়াত ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে নির্ধারিত নয়টি নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও জেলা সমিতির উদ্যোগে পরীক্ষার্থীদের সহায়তা এবং অভিভাবকদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ওএমআর ফরম কালো বলপেন দিয়ে পূরণ করতে হবে এবং এতে কোনো ভুল হলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া অতিরিক্ত ওএমআর সরবরাহ করা হবে না। ওএমআর ফরম ভাঁজ, কাটাকাটি, দাগ দেয়া, স্ট্যাপলার বা পিন ব্যবহার এবং ফরমের ওপর পানি ফেলা নিষিদ্ধ।

রোল নম্বর, শিফট ও প্রশ্নপত্রের সেট কোড অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে হবে। পরীক্ষা শেষে ওএমআর শিট ও প্রশ্নপত্র পরিদর্শকের কাছে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের অন্তত ১০ মিনিট আগে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ, বইপত্র, মোবাইলফোন, ঘড়ি, ক্যালকুলেটর কিংবা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পরীক্ষা শেষ হওয়ার সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে ju-admission.org ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষার সময় এসএসসি পরীক্ষার মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও পবেশপত্র সাথে রাখতে হবে।

জাবি শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যেকোনো সহায়তায় ছাত্রশিবির প্রস্তুত থাকবে। শিবিরের পক্ষ থেকে দু’টি তথ্যসহায়তা কেন্দ্র থাকবে। কেন্দ্রে ভর্তিচ্ছুদের জন্য কলম, বুকমার্ক, জরুরি প্রয়োজনে বাইক সার্ভিস, বসার জন্য জায়গা এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকবে।’

ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ড. মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা থাকবেন। এছাড়াও নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, আগামীকাল ২১ ডিসেম্বর ‘সি’ ইউনিট, ২২ ডিসেম্বর ‘বি’ ও ‘ই’ ইউনিট, ২৩ ডিসেম্বর ‘সি-১’ ও ‘ডি’ ইউনিটের একাংশ এবং ২৪ ডিসেম্বর ‘ডি’ ইউনিটের বাকি অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২৮ ডিসেম্বর ‘এ’ ইউনিটের একাংশ ও আইবিএ-জেইউ এবং ২৯ ডিসেম্বর ‘এ‘ ইউনিটের বাকি অংশের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবারের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হবে।

প্রতিদিন একাধিক শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।