হুমকি-ধামকি দিচ্ছে মাইলস্টোন প্রশাসন, অভিযোগ নিহতদের পরিবারের

শিক্ষকদের আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা চাই এই ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি হোক।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
মানববন্ধনে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা
মানববন্ধনে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা |সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থানান্তর, দুর্ঘটনার দিনের স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে দেয়াসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত স্বজনেরা।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় এ মানববন্ধন শুরু হয়। এ সময় অভিভাবকদের চোখ ছলছল করছিল। অনেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ করেন। এ সময় পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন নিহত ফাতেমার মামা লিয়ন মীর।

দাবিগুলো হলো- দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা, সারা দেশে মাইলস্টোনসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি নিহত শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচ কোটি টাকা এবং প্রতিটি আহত শিক্ষার্থীর জন্য ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া। পাশাপাশি স্কুলের পক্ষ থেকেও প্রতিটি নিহতের পরিবারকে দুই কোটি টাকা এবং আহতদের এক কোটি টাকা করে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া রানওয়ে থেকে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের স্থান পরিবর্তন অথবা রানওয়ের অবস্থান পরিবর্তন, কোচিং ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা খাদিজাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার, স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরিবারের কাছে প্রদর্শন এবং বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা জনহীন এলাকায় সরিয়ে নেয়ার দাবিও উত্থাপন করেছেন পরিবারগুলো।

মানববন্ধনে নিহত শিক্ষার্থী ফাতেমার মামা লিয়ন মীর অভিযোগ করেন, অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে এবং হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা চাই এই ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি হোক। এ সময় তার সাথে আরো অনেক অভিভাবক ছিলেন, যারা সবাই শিক্ষকদের আচরণের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নিহত রাইসা মনির মা মীম আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েটা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু অন্তত যেন আর কোনো মা তার সন্তানকে এভাবে হারাতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচার না হলে আমরা কোথায় যাবো? বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়েছিলাম পড়াশোনা শেখার জন্য, লাশ হয়ে ঘরে আসবে তা ভাবিনি। এই ব্যথা সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।’

আব্দুল মান্নান নামের আরেক অভিভাবক ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ‘এটা শুধু দুর্ঘটনা নয়, অবহেলার ফল। স্কুলের লোকজন আমাদের সাথে এমন আচরণ করছে যেন আমরা দোষী। আমাদের চোখে ধুলো দেয়ার চেষ্টা করছে তারা। আমার ঘর এখন শুনশান। বইয়ের ব্যাগ, স্কুল ড্রেস সব যেমন ছিল তেমন আছে, কিন্তু ও নেই। যে ভুলে আমার বাচ্চা চলে গেছে, সেই ভুল যেন আর না হয়।’

অন্যদিকে, নিহত ও আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘোষিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। সময়সীমার মধ্যে দাবিগুলো পূরণ না হলে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।