ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষর

এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে মোট এক হাজার ৬১৫ জন পেশাজীবী ও স্নাতককে উন্নত কারিগরি ও পেশাগত দক্ষতায় প্রশিক্ষিত করা হবে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষর
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষর |নয়া দিগন্ত

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটেটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশনস প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) মধ্যে সম্প্রতি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সমঝোতার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের শিল্পখাতে দক্ষতা ও উদ্ভাবনসহায়ক পরিবেশ তৈরির উদ্দেশে উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা।

এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে মোট এক হাজার ৬১৫ জন পেশাজীবী ও স্নাতককে উন্নত কারিগরি ও পেশাগত দক্ষতায় প্রশিক্ষিত করা হবে।

বাংলাদেশ সরকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের মাধ্যমে এসআইসিআইপি বাস্তবায়ন করছে। যার লক্ষ্য প্রযুক্তি গ্রহণ ও উদ্ভাবনের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় পরিচালিত এ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত চলবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া প্রকল্পটিতে ২ লাখ ২০ হাজারের মতো প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন।

এসআইসিআইপি’র সাথে এ উদ্যোগের মাধ্যমে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি নারী ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণকে আরো এগিয়ে নিচ্ছে। পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সম্পর্ক উন্নত করা এবং টেকসই ও প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ও সেবা খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে।

এসআইসিআইপি’র কনফারেন্স রুমে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষে স্বাক্ষর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটেটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশনস প্রোগ্রামের অতিরিক্ত সচিব ও ডেপুটি এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মো: মাহফুজুল আলম খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুগ্মসচিব মো: মনজুর আলম প্রধান।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ প্রকল্পের আইসিটি অংশ বাস্তবায়ন করবে। এতে মোট আটটি দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স পরিচালিত হবে। প্রতিটি কোর্সের মেয়াদ ৪ মাস (১০০ ঘণ্টা)। এ প্রশিক্ষণগুলোতে এক হাজার ৪৪০ জন অংশগ্রহণকারী অংশ নেবেন।

প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো হলো- ভিএলএসআই সার্কিট ও লেআউট ডিজাইন, ডিজিটাল ফিজিক্যাল ডিজাইন, পিসিবি ও আইওটি ডিভাইস ডিজাইন, ফার্মওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), ডাটা সায়েন্স, ব্লকচেইন ও ফিনটেক ডেভেলপমেন্ট।

কোর্সগুলো ইন্ডাস্ট্রি পেশাজীবী, নবীন স্নাতক ও সংশ্লিষ্ট কারিগরি বিষয়ে ডিপ্লোমাধারীদের জন্য প্রণীত। এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা অ্যাকাডেমিক জ্ঞানকে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদানুযায়ী বাস্তব দক্ষতায় রূপান্তর করতে পারবেন এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতিতে কার্যকর অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।

ফার্মাসিউটিক্যাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ফার্মেসি দেশের ক্রমবর্ধমান ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে পেশাগত সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফার্মাসিউটিক্যাল কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেশনস কোর্সটি পরিচালনা করবে। এ ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের মেয়াদ ৬ মাস (৩০০ ঘণ্টা) এবং এতে ১৭৫ জন অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণ নেবেন।

এ ডিপ্লোমা কোর্সটির মাধ্যমে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পেশাজীবী ও বিফার্ম স্নাতকরা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। এটি গুণগত নিশ্চয়তা, উৎপাদন মান বজায় রাখা ও আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক মানদণ্ড বিষয়ে তাদের উন্নত জ্ঞান প্রদান করবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল খাত বৈশ্বিক বাজারে আরো এগিয়ে যাবে।

অ্যাকাডেমি ও সরকারি খাতের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ উদ্যোগটি জাতিসঙ্ঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি-৪ (গুণগত শিক্ষা), এসডিজি-৮ (শোভন কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি) ও এসডিজি ৯ (শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।