কুমিল্লায় বাসা থেকে কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার রিন্তি ও মা তাহমিনা আক্তার ফাতেমাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

কুবি প্রতিনিধি

Location :

Cumilla
কুমিল্লায় বাসা থেকে কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার
কুমিল্লায় বাসা থেকে কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার |নয়া দিগন্ত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার রিন্তি (২৩) ও মা তাহমিনা আক্তার ফাতেমাকে (৫২) নিজ বাসায় শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে নগরীর কালিয়াজুরি খেলার মাঠের পাশের একটি নেলী কটেজ ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে রোববার কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়িতে ভাড়া বাসায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- গৃহিনী তাহমিনা আক্তার ফাতেমা ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তার রিন্তি। সুমাইয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬ ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বাড়ির মালিক আনিছুল ইসলাম রানা জানিয়েছেন, চার বছর আগে কুমিল্লার আদালতের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাড়িটি ভাড়া নেন। গত বছর তার মৃত্যুর পর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ফাতেমা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া আফরিন রিন্তি ও তার আরো দুই ছেলে বাড়িটিতে থাকছেন। তারা অন্য কারো সাথে তেমন কথা বলতেন না। গতকাল রাতে তার দুই ছেলে ঢাকা থেকে বাসায় আসলে তারা ঘরের দরজা খোলা দেখেন। এই সময় তারা ভাবেন তাদের মা ও বোন ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু বাসায় ঢুকার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে জাগাতে গিয়ে দেখেন তারা নড়ছেন না। পরে ৯৯৯ এ কল পেয়ে সোমবার ভোরবেলা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে একজন ব্যক্তি রোববার দিনের বেলায় তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করেছিল। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

নিহত তাহমিনার বড় ছেলে মো: তাজুল ইসলাম ফয়সাল (৩৪) জানান, তারা দুই ভাই এক বোন। ছোট ভাই কুমিল্লা ইপিজেডে চাকরি করেন। তিনি ঢাকায় আইন পেশায় নিযুক্ত। গতকাল ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে যান। তার ভাইও বাসায় ফিরে নিজের রুমে গিয়ে বিশ্রাম নেন। তখন তার মাকে বারবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে মায়ের রুমে যান। সেখানে তার মায়ের নিথর দেহ দেখতে পান। বোনের কক্ষে গিয়েও বোনের লাশ দেখতে পান। তাজুল ইসলাম ফয়সাল আরো জানান, দুর্বৃত্তরা তার মা ও বোনকে হত্যা করে মোবাইল ফোন ল্যাপটপ, কানের দুল নিয়ে যায়।

কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে নেলী কটেজের ২য় তলায় দুটি কক্ষে খাটের ওপর মা ও মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। প্রাথমিকভাবে তাদের দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বলা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিষয়টি খোঁজখবর নিচ্ছি। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’