রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের স্মারকলিপি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে রাবি শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল স্মারকলিপি দিয়েছে।

রাবি প্রতিনিধি

Location :

Rajshahi
রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের স্মারকলিপি
রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের স্মারকলিপি |নয়া দিগন্ত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে স্মারকলিপি দিয়েছে রাবি শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাকসু কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।

রাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষে সাত দফা দাবি জানিয়েছে শিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। তারা বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. পোলিং অ্যাজেন্টদের প্রবেশাধিকার ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ হতে যাবতীয় সুবিধা নিশ্চত করা।

২. সাংবাদিকদের জন্য পৃথক আইডি কার্ডের ব্যবস্থা রাখা এবং কেবল প্রশাসন অনুমোদিত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার প্রদান করা।

৩. ত্রুটিমুক্ত ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা এবং বিশেষজ্ঞ টিম রাখা।

৪. কোনো প্রার্থী প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়ে আপত্তি করলে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার ব্যবস্থা রাখা।

৫. প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা।

৬. ভোটের দিন ক্যাম্পাসে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ রাখা।

৭. নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।

এ সময় শিবিরের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’র প্যানেল থেকে নয় দফা দাবি দিয়েছি। তার মধ্যে অন্যতম, কেন্দ্রে পোলিং অ্যাজেন্টদের প্রবেশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা, সাংবাদিকদের জন্য পৃথক কার্ডের ব্যাবস্থা করা, ত্রুটি মুক্ত ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা, ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা, ভোট গণনা প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো ইত্যাদি। আশা করি, নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবে।

এর আগে বেলা ১টার দিকে স্মারকলিপি দেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাবি শাখা। তাদের দাবিগুলো হলো-

১. ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বছতা বজায় রক্ষার্থে অবশ্যই ‘স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স’ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

২. ভুয়া ও জাল ভোট শনাক্তের জন্য বাধ্যতামূলক ‘ছবি যুক্ত ভোটার’ তালিকা প্রদান করতে হবে।

৩. ডিজিটাল কারচুপি ও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রভাব প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই ‘ম্যানুয়াল পদ্ধতি’ এর মাধ্যমে ভোট গণনা করতে হবে।

৪. ভোট চলাকালীন সময়ে ভোট প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত বৈধ কার্ড/পাশধারী ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কাউকে ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটার এর মধ্যে ঢুকতে দেয়া যাবে না। এমনকি ভোটার লাইন ব্যতীত এলোমেলোভাবে কোনো বৈধ ভোটার/ভোটারগণ একত্রিত হয়ে যেন জটলা সৃষ্টি না করে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করতে হবে।

৫. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখার স্বার্থে, নির্বাচনে অবৈধ কালো টাকার প্রভাব প্রতিরোধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৬. সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতেই সকল প্রার্থীর জন্য একই আচরণ বিধিমালা মেনে চলার বিষয়টি মনিটরিং করতে হবে।

স্মারকলিপি প্রদানের পর সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, এই দাবিগুলো শুধু ছাত্রদলের না আমরা সকল প্যানেল, সকল প্রার্থীদের সাথে কথা বলে দাবিগুলো জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে তারা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ করবে। আর ম্যানুয়ালি ভোট গণনার যে বিষয়টা সেটা সময়সাপেক্ষ বিষয় হলেও জনবল বেশি হলে তা করা সম্ভব হবে। আমরা আশা রাখছি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছি। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির যে দাবিগুলো জানিয়েছে, সেগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে যেগুলো নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।’

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মমতাজউদ্দিন অ্যাকাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ কলাভবন, সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবন, জাবির ইবনে হাইয়ান অ্যাকাডেমিক ভবন, জামাল নজরুল অ্যাকাডেমিক ভবন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু অ্যাকাডেমিক ভবন, জগদীশচন্দ্র অ্যাকাডেমিক ভবনের দুটি করে কেন্দ্রে এবং জুবেরী ভবনের একটি কেন্দ্রে মোট ১৭ টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে।

ভোট গ্রহণ শেষে রাকসু কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে ভোট গণনা এবং কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এছাড়া নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত দুই হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।