রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় আট শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি বৈঠকে ঘটনাস্থলে উপস্থিতদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো: শওকাত আলী বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন সাফায়েত শুভ (১৬ ব্যাচ), শাহরিয়ার অপু (১৬ ব্যাচ), সজিব (১৬ ব্যাচ), সৌরভ (১৬ ব্যাচ), নাজমুজ সাকিব (১৬ ব্যাচ), রোহান সরকার রোহান (১৬ ব্যাচ), জিহাদ (১৬ ব্যাচ) ও আশরাফুল (১৪ ব্যাচ)।
এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রকৌশল অনুষদের ডিন ইলিয়াস প্রামাণিককে আহ্বায়ক ও প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিজয় ২৪ সালের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান, ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আমির শরীফ ও অধ্যাপক এমদাদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেন-জি ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে মার্কেটিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার অপুর সাথে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে মীমাংসা হলেও সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন চকবাজার এলাকায় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। এর জেরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে ৯টার পর দফায় দফায় স্লোগান দিতে দেখা যায় পরিসংখ্যান ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষে ভাঙচুর চালান। এতে আহত হন পরিসংখ্যান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জনি ও প্রান্ত এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ। এর মধ্যে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত প্রান্তকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভিসি ড. মো: শওকাত আলী বলেন, ‘বিদ্যাপীঠের মতো পবিত্র জায়গায় যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বরদাশত করা হবে না।’ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বহিষ্কারের সংখ্যা বাড়বে বলেও জানান তিনি।
নির্দিষ্ট কোনো সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বহিষ্কার মানে বহিষ্কার, কোনো সেমিস্টার নেই এখানে। বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এসব কীটকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করতে হবে।’