গাজায় নিরীহ মানুষের প্রতি ইসরাইলের নৃশংস আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের ঘোষণায় সাড়া দিয়ে সকল ক্লাস ও ল্যাব বর্জন করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীরা। একইসাথে ফিলিস্তিনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বুটেক্সের প্রধান ফটকের সামনে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বুটেক্সের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মানবতার কথা বলে গণহত্যায় সরাসরি সহযোগিতা করার জন্য আমেরিকা এবং ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশের শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থাকায় নিন্দা জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইজ অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের নিজেদের তাদের সমকক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটি কোনো ধর্মীয় বিষয় নয়। এটি ন্যায় ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আমাদের এ আন্দোলন ফিলিস্তিনের জনগণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত চলবে।’
ফ্যাব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এমদাদ সরকার বলেন, ‘সমগ্র মুসলিম উম্মাহ এক দেহের মতো। দেহের কোনো অংশে ব্যথা হলে আমরা তা অনুভব করি। তাই আজ আমরা আমাদের দায়িত্ববোধ থেকেই এখানে দাঁড়িয়েছি।’
বিশ্বের মুসলিম নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আর কবে আপনাদের হুঁশ ফিরবে? আপনার দেশের মরণাস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র কাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাবেন? আপনারা কি মনে করছেন এসব অস্ত্র দিয়ে কেবল নিজের দেশের জনগণকে হেফাজত করবেন? তা কখনোই সম্ভব নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো: তৌহিদ ইলাহী শাফী বলেন, ‘গাজায় আমাদের মুসলিম ভাইদের ওপর চলমান গণহত্যা ও নৃশংসতা মানবতার সকল সীমা অতিক্রম করেছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু প্রার্থনা কিংবা বয়কট নয়, প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য একটি শক্তিশালী ইসলামী রাষ্ট্র ও মুসলিম সেনাবাহিনী গঠন এখন সময়ের দাবি। উম্মাহর ঐক্য ও প্রতিরোধই হতে পারে মুক্তির পথ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্যিকারের জবাবদিহির প্রস্তুতি নেয়ার তাওফিক দিন।’