আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, তাই হয়তো আজও বেঁচে আছি। নইলে অনেক আগেই গুম খুনের শিকার হতাম। মানুষের স্বাধীনতা হরণকারী তৎকালীন ফ্যাসিস্ট শাসক ও তার দল কতটা নির্মম, বর্বর সেটা নিজ দেশের কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে দিয়ে গেছে। আমরা ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছি, কোনো অপশক্তি আমাদের এখন পথরোধ করতে পারবে না।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) আয়োজিত মাসব্যাপী (৩৬ দিনব্যাপী) কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ফিরে দেখা জুলাই’ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে বাউবির ভিসি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
গত ১৫ বছরের সময়কে একটি ‘কালো অধ্যায়’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন ‘বাংলাদেশকে রক্তগঙ্গায় পরিণত করেছিল ফ্যাসিস্ট বাহিনী। ৩৬ জুলাইয়ের পর আমরা আজ স্বাধীনতার সাথে কথা বলতে পারি, সমালোচনা করতে পারি। আমরা বৈষম্যহীন, ন্যায্য, শোষকমুক্ত সমাজ গড়তে চাই। হিংস্রতা নয় সহনশীলতা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা দিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গঠিত হবে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভূত্থানে শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের ডিন অধ্যাপক তানভির আহসানের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিগত ফ্যসিস্ট আমলের অনিয়ম, দুর্নীতি, পুলিশি অপশাসন, পেশি শক্তি, গুম খুন রাহাজনি, আয়না ঘরের নির্যাতন, কোটার অপব্যবহার, বাকশক্তি হরণ ও হিংস্রতা বর্বতার নানা চিত্র তুলে ধরেন বাউবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সাঈদ ফেরদৌস, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা: শামীম। জুলাই আগস্টের ভয়ংকর দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন বাউবির অধ্যাপক মো: আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ড. এ কে এম আশরাফুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক অনন্য লাবনী, সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান আরিফ সালিম, সহকারী অধ্যাপক মো: কবির উদ্দিন সহকারী অধ্যাপক মো: আল আমিন, মিডিয়া বিভাগের পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) শরীফ মো: সাহাবউদ্দিন, আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ভূইয়া, সহকারী পরিচালক মো: আশরাফুল হক এবং বাউবির শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে ভিসি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডসহ র্যালিতে অংশ নেন। ভিসির দফতরের সামনে থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা ‘গণতন্ত্র রক্ষায় জনতার চেতনাই শক্তি’,‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না’ প্রভৃতি শ্লোগানে মুখর করে তোলেন গোটা ক্যাম্পাস।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি ও তাৎপর্য নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।