ঢাবিতে নারী শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেত্রীদের হেনস্থা এবং সারাদেশে নারী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে অব্যাহত সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে নেতাকর্মীরা ঢাবি ছাত্রীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকির নিন্দা জানান এবং দেশব্যাপী ছাত্রদলের নারী নেত্রীদের সাইবার বুলিং ও সামাজিক হেনস্তাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এসময় জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, ‘আমরা দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। যার কারণে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে সেসমস্ত শিক্ষার্থীদের উপরে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়ে আক্রমণ করছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন রাকসু নিয়ে কথা হচ্ছে সেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়েছে। এর তীব্র ও নিন্দা জানান এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।’
জাবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আফফান আলী বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি গতকাল ঢাবিতে একজন নারী শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি ১৯৭১ সালে যে সংগঠন নারীদের ধর্ষণ করতো তারাই আজকে আমাদের ছোট বোনদের ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে, তারাই আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নারী নেত্রীদের ওপর হামলা করেছিল। এদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে নারীরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল, আমাদের শক্তি জুগিয়েছিল আজকে তাদেরকে সাইবার বুলিং এর মাধ্যমে রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।’
এসময় অন্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন- জাকসু নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান, জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী, এজিএস প্রার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম ও আঞ্জুমান আরা ইকরাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
এর আগে এক ফেসবুক পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আলী হুসেন নামের বিকৃত মস্তিষ্কের এক ব্যক্তি কর্তৃক অশ্লীল মন্তব্যের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। আমরা এই ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছি। অথচ এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আইনি পদক্ষেপ কিংবা বিচার না চেয়ে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে দিল ছাত্রদল। যা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদল সভাপতি কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে তার সেক্রেটারিকে বলেছিলেন ‘শিবিরকে দায় দিয়ে দাও’। কতটুকু দেউলিয়া হলে একটি দল ‘দায় দিয়ে দাও’ রাজনীতির প্রচলন করতে পারে।’