আমি কেন ক্ষমা চাইব, আমি তো কোনো অন্যায় করিনি : বাকৃবি ভিসি

ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি কেন ক্ষমা চাইব? আমি তো কোনো অন্যায় করিনি।’

মো: লিখন ইসলাম, বাকৃবি

Location :

Mymensingh
বাকৃবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
বাকৃবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের চলমান কম্বাইন্ড ডিগ্রির আন্দোলনে গতকাল (রবিবার) আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে কতিপয় দুর্বৃত্ত। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এ নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ৯টা থেকে কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।

দুপুর সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় এসে জমা হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন এবং প্রেফ ব্রিফিং চলাকালীন ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।

ছয় দফা দাবির অন্যতম একটি দাবি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থার ঘটনার জন্য ভিসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি কেন ক্ষমা চাইব? আমি তো কোনো অন্যায় করিনি।’

শিক্ষার্থীদের বাকি দাবিগুলো হলো- অবৈধভাবে হল ভেকেন্টের নির্দেশনা দুপুর ২টার মধ্যে প্রত্যাহার করে আদেশ তুলে নিতে হবে, হলগুলোতে চলমান সব ধরনের সুবিধা (পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস) নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে, এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে, হামলার সাথে জড়িত শিক্ষক এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং গত এক মাস ধরে চলমান যে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রি অবিলম্বে প্রদান করতে হবে, তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, ‘আমরা আড়াই শতাধিক শিক্ষক আন্তরিকতার সাথে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়েছি। শতভাগ দাবি মেনে নেয়ার পরেও কেন তারা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করলো, সেটি আমার প্রশ্ন। আট ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর শিক্ষকেরা প্যানিকড ও ট্রমায় পড়ে যান। পরে কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীরা তালা ভেঙ্গে শিক্ষকদের বের করতে সাহায্য করেন।’

বহিরাগতদের হামলার বিষয়ে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে দাবি করছে শিক্ষকেরা বহিরাগতদের দিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে, এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমরা বাইরের কাউকে বলিনি ক্যাম্পাসে আসতে, আমরা কেন বলবো? ছাত্রছাত্রীরা তো আমাদের ছেলে-মেয়ের মতো।’

ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের বিষয়ে ভিসি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, বিবিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ভাংচুরের বিষয়ে আমি অবশ্যই কমিটি করবো।’