নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ইম্প্রুভমেন্ট ও ব্যাকলগের পরীক্ষানীতিকে চ্যালেঞ্জ করে আইনি নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী মোহাম্মদ আলী।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মোহাম্মদ আলীর পক্ষে নোয়াখালী জজ কোর্টের আইনজীবী মো: আজগর আলী আরজু নোবিপ্রবির রেজিস্টারের প্রতি এ আইনি নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পূর্বঘোষিত ইমপ্রুভমেন্ট ও ব্যাকলগ পরীক্ষার নীতিমালা পরিবর্তন করে নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা পূর্ববর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য বৈষম্যমূলক ও মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। নতুন নিয়মে সিজিপিএ ৩.০০ বা তার কম প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা উচ্চশিক্ষা, বৃত্তি ও চাকরির সুযোগ অর্জনে তাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। এ সিদ্ধান্তকে প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা ও সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী বলা হয়েছে।
নোটিশে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো- নতুন নীতিমালা বাতিল করে পূর্বের নীতিমালা পুনর্বহাল করা, সিজিপিএ ৩.০০ বা কম প্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার সুযোগ দেয়া এবং ভবিষ্যতে নীতিনির্ধারণে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ও আইনগত পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করা।
এছাড়া এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘লিগ্যাল নোটিশ দেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, অনেক আগে থেকেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়ম নীতিমালা কার্যকর ছিল তাও যথাযথ ফলপ্রসূ নয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফলো করে অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২.৭৫ পেলেই ইমপ্রুভমেন্ট দিতে পারে। আমাদের এখানে ২.৫০ এর নিচে হলেই কেবল ইমপ্রুভমেন্ট দিতে পারে। যা একজন শিক্ষার্থীর ভালো ফলাফল অর্জনে অন্তরায়। আর আগের নীতিমালায় উল্লেখ করা ছিল, যে কোনো ব্যাচের সাথে চাইলেই ব্যাকলগ দিতে পারবে। এখন নতুন আইন করেছে যা শুধু ইমেডিয়েট জুনিয়রদের সাথে ব্যাকলগ পরীক্ষা দিতে হবে অন্যথায় স্পেশাল দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘হঠাৎ এ আইন কার্যকর করায় শিক্ষর্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ন্যায্য দাবী আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের এ দাবিকে কোনো আমলে নেয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করি। যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
আইনি নোটিশের ব্যাপারে জানতে নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রারকে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নোবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘লিগ্যাল নোটিশের বিষয়টি এখনো আমার কাছে আসেনি। না দেখে বলতে পারবো না। আসার পর আমরা এটা বিবেচনা করবো ও দেখবো। এখন যে নিয়ম আছে সেই নিয়মেই চলছে।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ইম্প্রুভমেন্ট ও ব্যাকলগ পরীক্ষা নীতির ব্যাপারে দাবি জানালেও আমলে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করলে ইম্প্রুভমেন্ট ও ব্যাকলগ পরীক্ষা নীতি সংক্রান্ত একটি কমিটি করা হয়।



