টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের নবম আসরে চূড়ান্ত পর্বের তিন ক্যাটাগরিতেই প্রথম স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া প্রথম দুই ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়ে চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন্স হয়েছেন বুটেক্সের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বায়েজিদ আহম্মেদ।
বুধবার (১২ নভেম্বর) টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পবিষয়ক ম্যাগাজিন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেক্সটাইল টুডের উদ্যোগে রাজধানীর রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের সামনে টেক্সটাইল খাতের সমস্যা, সমাধান ও উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণাভিত্তিক প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন। দেশব্যাপী প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তাদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হয়। চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয় সাতটি দল।
মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়া হয়। সেরা প্রজেক্ট, সেরা একক ও সেরা পোস্টার। সেরা প্রজেক্ট ক্যাটাগরিতে প্রথম তিনটি স্থানই অর্জন করে বুটেক্সের শিক্ষার্থীরা।
সেরা প্রজেক্ট ক্যাটাগরির বিজয়ীরা হলেন বায়েজিদ আহম্মেদ, মো: আলিমুল মাহাদি ও মো: মনোওয়ার হাবিব। প্রথম রানার্স আপ দলের সদস্যরা হলেন মো: আজমাইন ফাইক, মো: রাকিবুল ইসলাম, নাজমুস সাকিব অয়ন ও সরোয়ার হোসেন সামি। দ্বিতীয় রানার্স আপ দলের সদস্যরা মো: আবদুল ওহাব শামস, মো: নাফিস কামাল আলিফ, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার ও শামসুজ্জামান জুয়েল।
চ্যাম্পিয়ন, প্রথম রানার্স আপ ও দ্বিতীয় রানার্স আপ দলকে দেয়া হয় যথাক্রমে দেড় লাখ, এক লাখ ও ৭৫ হাজার টাকা।
সেরা একক ক্যাটাগরিতেও শীর্ষস্থান অর্জন করেন বুটেক্সের বায়েজিদ আহম্মেদ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানার্স আপ হয়েছেন বুটেক্সের মো: আবদুল ওহাব শামস ও নিটারের মো: ইমতিয়াজ ইমাম। তাদের পুরস্কার ছিল যথাক্রমে এক লাখ, ৪৫ হাজার ও ৩০ হাজার টাকা।
সেরা পোস্টার পুরস্কার অর্জন করেন বুটেক্সের ৪৭তম ব্যাচের মো: রাকিবুল ইসলামের দল।
অনুষ্ঠানে বুটেক্সের ডাইস অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিনকে ‘এইচঅ্যান্ডএম ফাউন্ডেশন গ্লোবাল চেইঞ্জ অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অর্জনের জন্য বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়।
আইটিইটি’র কনভেনর ও টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ইহসানুল করিম কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, ‘সরকার অবৈধ আয়ের বিষয়টি মোকাবেলার জন্য সম্প্রতি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে, যাতে কোনোভাবেই অবৈধ উপার্জনকে বৈধ করা না যায়। এটি একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সমাজ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি বৈষম্যহীন দেশ গড়া, যেখানে অবৈধ আয়কে বৈধ সম্পদে রূপান্তর করার কোনো প্রয়োজনই থাকবে না।’
চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন্স বায়েজিদ আহম্মেদ বলেন, ‘ফ্যাক্টরির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ঘুরে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে পেরেছি, যা পাঠ্যক্রমে পাওয়া যায় না। ক্যারিয়ারবিষয়ক সেমিনার ও সফট স্কিল প্রশিক্ষণ ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে সহায়ক হবে।’
বিজয়ী দলের সদস্য আলিমুল মাহাদি বলেন, ‘তত্ত্বীয় জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতা আমার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে।’
প্রথম রানার্স আপ দলের সদস্য রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের প্রজেক্টে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তাইওয়ান পারসোটেক্স করপোরেশনের টেকনিক্যাল হেড রাহাত উল্লাহ রাশেদ ও হ্যামস গার্মেন্টস লিমিটেডের দুই ম্যানেজার মো: রিয়াজ উদ্দিন ও মো: নজরুল আমিন শোভন।
তিনি আরো বলেন, ‘ইন্টার্নশিপের চাপের মধ্যেও দলগতভাবে কাজে মনোযোগ ধরে রাখা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বুটেক্সের ভিসি অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো: জুলহাস উদ্দিন ও বিইউএফটির ভারপ্রাপ্ত ভিসি ও জাজেস প্যানেলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার আয়ুব নবি খান।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান, বিজিবিএ সভাপতি মো: মফজ্জল হোসেন পাভেল, এফবিসিসিআই’র সাবেক প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান ও আইটিইটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো: এনায়েত হোসেন।



