জাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদলের ১২ অভিযোগ, পুনর্নির্বাচনের দাবি

মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান।

আতাউর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Location :

Dhaka
সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল
সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল |নয়া দিগন্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১২টি অভিযোগ উত্থাপন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। এসব অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে নেপথ্যের সত্য উন্মোচন ও পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান।

অভিযোগে বলা হয়, ছবিসহ ভোটার তালিকা, অমোচনীয় কালি ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা না থাকায় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংসদের ব্যালটে ক্রমিক নম্বর ও মুড়ি না থাকা, নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স পাঠানো এবং ভোটারের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যালট পেপার পাঠানো ছিল ইচ্ছাকৃত অনিয়ম। এমনকি অখ্যাত একটি প্রাইভেট কোম্পানির মাধ্যমে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন কেনা হয়, যেখানে অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানোর অভিযোগও রয়েছে।

তারা অভিযোগ করে, বিভিন্ন হলে প্রকাশ্যে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। প্রভোস্টরা একটি নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ভূমিকা পালন করেছেন। এমনকি নারী সাংবাদিক ও প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন। প্রথম কয়েক ঘণ্টা প্রার্থীদের অ্যাজেন্ট ছাড়া ভোট গ্রহণ হয়েছে। পরে তাদের ঢুকতে দেয়া হলেও হয়রানি করা হয়। ভোট গণনায়ও অসঙ্গতি দেখা যায়—কোথাও প্রদত্ত ভোটের চেয়ে ঘোষিত ভোট বেশি, কোথাও প্রার্থীর নাম ব্যালটে ছিল না। এছাড়া ভোটের আগের দিন থেকেই বহিরাগতদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যারা ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি হলে নির্ধারিত সময়ের বাইরে ভোট গ্রহণও অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযোগে আরো বলা হয়, রফিক জব্বার হলের একজন শিক্ষার্থী ভোট দিতে গিয়ে দেখেছেন তার ভোট আগেই অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা হারিয়েছেন। নির্বাচন শেষে প্রশাসনের কাছে ভোটার তালিকা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চাইলে তা সরবরাহ করা হয়নি বরং কালক্ষেপণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের শুভ সূচনার যে প্রত্যাশা, সার্বিকভাবে কারচুপি ও অব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই প্রত্যাশার অকাল মৃত্যু ঘটেছে। ফ্যাসিস্টের সময়ের নির্বাচন নামের প্রহসনের প্রক্রিয়াকে বিলুপ্ত করে আমরা একটি পরিচ্ছন্ন নির্বাচনী ব্যবস্থার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই স্বপ্নও ভেঙে গেছে। তারপরেও আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সার্বিক অনিয়ম সম্পর্কে প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। আমরা এ অভিযোগগুলোর তদন্তের মাধ্যমে নেপথ্যের প্রকৃত সত্যগুলো উন্মোচন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’