গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৩২ হাজার সিরিয়াল নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের মেয়ে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ৪০ নম্বর পেয়ে প্রথমে তিনি বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগে ভর্তি হন, পরে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে জীববিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগে সুযোগ পান। এ বছর ওই বিভাগে মেধাতালিকায় সর্বশেষ ৫০৩৫ সিরিয়াল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় মোট তিনজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। ভিসির মেয়ে ছাড়াও বাকি দু’জন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের ছেলে ও ইলেকট্রিশিয়ান আরিফ হোসেন সুমনের ছেলে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তাদের প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৩৯.৫০ এবং ৫৩.৫০। পোষ্য কোটায় ভর্তি হওয়া এ তিনজনই জীববিজ্ঞান অনুষদে সুযোগ পেয়েছেন। এ বছর পোষ্য কোটাসহ মোট ২১জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন কোটায় ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি তুলেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এ দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। পরে এবার ভিসি তার নিজের মেয়েকে কোটায় ভর্তি করিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন।
তাদের বক্তব্য, একজন ভিসির মেয়ে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়েও যদি মেধার জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারে, তাহলে তাকে কেন কোটার সুযোগ দিয়ে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রাপ্য স্থান কেড়ে নেয়া হবে? গ্রামের একজন প্রান্তিক কৃষকের সন্তানের জন্য কেন এমন কোটার ব্যবস্থা নেই? সে প্রশ্নও তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘নিয়ম মেনেই কোটায় সবাইকে ভর্তি করা হয়েছে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী ৩০ নম্বর হলো পাস মার্ক, যা অতিক্রম করলেই কোটা ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যায়। ভিসির মেয়ে হিসেবে তাকে কোনো বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়নি।’
অন্য কোটায় ভর্তি- চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা হলো ১৮। তাদের মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে প্রতিবন্ধী কোটায় ৩ জন, হরিজন ও দলিত কোটায় ১ জন । ‘বি’ ইউনিটে- মুক্তিযোদ্ধা (সন্তান) ৪ জন, প্রতিবন্ধী ২ জন, হরিজন ও দলিত ১ জন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ জন। ‘সি’ ইউনিটে- ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ২ জন, বিকেএসপি ১ জন, মুক্তিযোদ্ধা ১ জন, হরিজন ও দলিত ১ জন, প্রতিবন্ধী ১ জন।