বুটেক্সে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, হল ত্যাগের নির্দেশ

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও আফটারশকের ঝুঁকির কারণে রোববার বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে আবাসিক হলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স

Location :

Dhaka City
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স)
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) |নয়া দিগন্ত

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও আফটারশকের ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সব ক্লাস ও পরীক্ষা ১১ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং আবাসিক হলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. রাশেদা বেগম দিনা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং পূর্বঘোষিত রুটিন অনুযায়ী আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী পরীক্ষাসমূহ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপশি ছুটিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২৪ নভেম্বর সকাল ১১টার মধ্যে হলগুলো খালি করতে হবে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি এগিয়ে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ, অফিস, ক্লাসসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ৭ ডিসেম্বর থেকে যথারীতি চলবে।

জানা যায়, আজ সকালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলীরা জরুরি ভিত্তিতে ক্যাম্পাসের ভবন ও হলগুলো পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক যাচাইয়ে ভবন ও হলগুলোতে সংস্কার প্রয়োজন বলে তারা উল্লেখ করেন এবং শহীদ আজিজ হলের ৪০১ ও ৪০৩ নম্বর রুম বসবাসের অনুপযোগী হিসেবে চিহিৃত করে জরুরি মেরামতের নির্দেশ দেন।

শহীদ আজিজ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো: আহসান হাবীব বলেন, ‘পরপর ভূমিকম্পের কারণে শহীদ আজিজ হলসহ কয়েকটি হলে ফাটল বা অবকাঠামোগত দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এজন্য আমরা প্রভোস্ট টিম শহীদ আজিজ হলে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা কক্ষগুলো দেখেছি, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি এবং প্রাথমিক অবস্থা মূল্যায়ন করেছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত ও ধৈর্য ধরে মোকাবেলা করতে হবে এবং প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আমাদের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।’

সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের শিক্ষার্থী মো: তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর থেকে আমাদের হলের ছাত্রদের মনে এক ধরনের অস্বস্তি ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় আমরা সবাই যে কতটা অসহায় তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। এর মধ্যে আমাদের হলটি রাস্তার পাশে হওয়ায় বড় কোনো গাড়ি চলাচল করলেই পুরো বিল্ডিং কাঁপতে থাকে। প্রতিবার সেই কম্পনে মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি গাড়ির কম্পন, নাকি আরেকটা ভূমিকম্প?’

উল্লেখ্য, গত দু’ দিনের ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম হলের প্রথম থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত এক্সটেনশন অংশে দেয়ালে ফাটল, শহীদ আজিজ হলের সিলিংয়ের বিম ও পিলারে ফাটল ও ওসমানী হলে প্লাস্টার খসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় গতকাল রাতেই আবাসিক শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে গিয়ে পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের দাবি জানান। পরে ভিসি এ বিষয়ে আশ্বাস দিলে তারা হলে ফিরে যান।