সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় ইবির ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৯ জনকে সতর্কবার্তা

সাংবাদিকদের উপর হামলা ও হেনস্তার ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলে থাকতে পারবেন না।

তাজমুল জায়িম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Location :

Kushtia
সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বহিষ্কৃত তিন শিক্ষার্থী
সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বহিষ্কৃত তিন শিক্ষার্থী |নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফুটবল মাঠে সাংবাদিকদের ওপর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের হামলা ও হেনস্তার ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও হলে থাকতে পারবেন না তারা। একইসাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরো ৯ শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

বহিষ্কৃতরা হলেন- ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান, আফসানা পারভীন তিনা ও রিয়াজ মোর্শেদ।

জানা যায়, গত ১২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্তঃসেশনের খেলাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নেয় এবং মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তাকে বাঁচাতে গেলে পরপর তিনজন সাংবাদিককে মারধর করেন তারা। পরবর্তী সময়ে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ফোন কেড়ে নেয়া ছাত্রীকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেন অভিযুক্তরা। এদিকে একদিন পর সাংবাদিকের ফোন রিসেট দিয়ে প্রক্টরের কাছে ফেরত দেন তারা।

ঘটনার পর ১৪ জুলাই ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে, অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আফসানা পারভীন তিনা (রোল নম্বর ২০০৭০৫১) দ্বারা সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়া ও উসকানির মাধ্যমে ঘটনার মাত্রা তীব্র করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এছাড়া একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসানের (রোল নং ২০০৭০৭৮) বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধর ও সাংবাদিকের মোবাইল রিসেট দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এছাড়া একই ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজ মোর্শেদের (রোল নম্বর ২০০৭০২০) বিরুদ্ধে ঘটনা ত্বরান্বিতকরণসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধে নাহিদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রমাণিত হয়। এছাড়া ছাত্রীকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দেয়া পাল্টা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

কমিটির সুপারিশের আলোকে গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় তিনা, নাহিদ ও রিয়াজকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

এছাড়া ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ৯ শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা হলেন- একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফরিদুল আলম পান্না, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ দত্ত, মিনহাজুল আবেদীন, সাব্বির হোসেন, সৌরভ হোসেন সজীব, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম, মিল্টন মিয়া (অজিল), মশিউর রহমান ও রাকিব হোসেন।

হলে অবস্থানের বিষয়ে শহীদ আনাস হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমি বহিষ্কারের বিষয়টা বিভিন্ন মারফতে অবগত হয়েছি। অফিশিয়াল চিঠি পেলেই তাদের হল ত্যাগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর হলে অবস্থানের কোনো সুযোগ নেই।’