জাককানইবি’র মাঠ সংস্কার কমিটিতে বিকেএসপি ও বাফুফে এক্সপার্ট, প্রশংসা খেলোয়াড়দের

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো: মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এস এম মোজতাহীদ প্লাবন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ |নয়া দিগন্ত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দীর্ঘ দিনের অব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ ব্যাহত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দুই এক্সপার্ট নিয়ে মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো: মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির একমাত্র খেলার মাঠ সংস্কারের নামে দীর্ঘসূত্রিতা-অনিয়ম, নিয়মিত টুর্নামেন্ট আয়োজনে অনাগ্রহ এবং বাজেট থাকার পরও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অপ্রতুলতার অভিযোগ নিয়ে খেলোয়াড়রা শারীরিক শিক্ষা দফতরের প্রধান ফটকে গত বছর তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেন। এছাড়াও তাদের অভিযোগ ছিল মাঠ সংস্কারের নামে অনুপযোগী বালু ও মাটি ফেলে মাঠের অবস্থা খেলার জন্য বিপদজনক করে তোলা হয়েছে। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সঠিক সংস্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিকেএসপি ও বাফুফের একজন করে সদস্য নিয়ে একটি খেলার মাঠ সংস্কার কমিটি গঠন করেছে। এতে আশোর আলো দেখছেন সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়রা।

অর্থনীতি বিভাগ টিমের ফুটবল খেলোয়াড় ও দলীয় অধিনায়ক ডিফেন্ডার (সেন্ট্রাল ব্যাক পজিশন) প্রবণ বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে যা খেলোয়াড়দের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ সংস্কারের জন্য বিকেএসপি ও বাফুফে-এর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি আশার সঞ্চার করেছে। আশা করছি, কমিটি শিগগিরই মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু করবে। ভালো মানের ঘাস ও আধুনিক সরঞ্জাম আমাদের অনুশীলনকে আরো কার্যকর করে তুলবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড় ও বিকেএসপির সাবেক খেলোয়াড় মো: সামিউল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি একদমই খেলাধুলার জন্য অনুপযুক্ত। মাঠে একদিকে যেমন ঘাসের অভাব অন্যদিকে মাটি অত্যন্ত শক্ত হওয়ায় খেলাধুলা করতে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন ইনজুরির মুখোমুখি হয়ে থাকেন। আমাদের মাঠ খেলার উপযুক্ত না হওয়ায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দলও বড় পর্যায়ে খেলতে গিয়ে ভালো ফলাফল করতে পারে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খেলোয়াড়দের কথা বিবেচনা করে বিকেএসপি এবং বাফুফের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা আমাদের মাঠ পুনরায় ঠিক করার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। এর ফলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় টিম বড় পর্যায়ে খেলতে গিয়ে ভালো ফলাফল করবে।’

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রমীলা ক্রিকেট টিমের সাবেক অধিনায়ক মুনমুন আহমেদ মিমু বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংস্কার কমিটিতে বিকেএসপি ও বাফুফে থেকে মনোনীত দু’জন অভিজ্ঞ এক্সপার্টকে অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। তাদের পেশাদার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনায় মাঠ সংস্কার কার্যক্রম আরো পরিকল্পিত, টেকসই হবে বলে আশা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও শারীরিক উন্নয়নের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে আগেও অনেক কিছুর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং সেগুলোর কোনো কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষার্থীরা সব সময়ই ভুক্তভোগী ছিল। আশা করছি, আগের মতো কোনো কিছু ঘটবে না। আমি এই কমিটির সফলতা কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

মাঠ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগামীকাল বিকেএসপি ও বাফুফে থেকে তারা দু’জন আসবেন। মাঠও কালকে দেখবেন। তারা আমাদের যেভাবে সাজেস্ট করবে আমরা সেভাবেই কাজ করব।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরেই যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মাঠের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয় নাই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংস্কার করতে বিকেএসপি ও বাফুফের দুই এক্সপার্টকে সম্পৃক্ত করেছি। তারা যেহেতু ক্রীড়াবিষয়ক দেশের সর্বোচ্চ সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের ইচ্ছা পূরণ হবে এবং খুব শিগগিরই সব ধরনের খেলার উপযোগী একটি মাঠ প্রস্তুত হবে।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দফতরের পরিচালক প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক জিয়া উদ্দিন মন্ডলকে সদস্য সচিব করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিকেএসপি ও বাফুফে থেকে একজন করে প্রতিনিধি রয়েছেন।