শ্রম খাত বিষয় সম্পর্কিত জাপানের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নতির প্রশংসা করেছেন। তবে তারা আরো অগ্রগতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল ও কাউন্সিলরস হাউসের সদস্য মিচিহিরো ইশিবাশি বলেছেন, ‘শ্রম পরিবেশের উন্নতি আমরা স্বীকার করি। তবে এখনো আরো উন্নতির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সফররত জাপানের সংসদ সদস্যরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। মিচিহিরো ইশিবাশি জাপানি সংসদ সদস্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
সাক্ষাৎকালে ইশিবাশি ইপিজেডের ভেতর ও বাইরে কারখানা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানিগুলো ঘুরে দেখে ইতিবাচক শক্তি অনুভব করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, জাপানি কোম্পানিগুলো অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে আরো বিনিয়োগ করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাপানকে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে অভিহিত করে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক।
ইউনূস জানান, শ্রম খাত সংস্কার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর একটি। এ বিষয়ে বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যেন আইএলও কনভেনশনসমূহ বাস্তবায়ন ও সময়মতো গ্রহণ নিশ্চিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি সবাইকে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করছেন।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, শ্রম ইস্যুতে আত্মসমালোচনামূলক হতে হবে এবং কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার প্রকল্পে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন এবং জাপানি কোম্পানিগুলোতে বাংলাদেশী টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা ১ লাখ তরুণকে জাপানে পাঠানোর পরিকল্পনা করছি। তারা ভাষা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, শিষ্টাচার ও ইতিহাস শিক্ষায় প্রশিক্ষণ নেবে। এটি কেবল শুরু। ভবিষ্যতে আরো অনেকে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, তরুণদের জন্য এটি সৃজনশীলতা প্রকাশ ও অনুসন্ধানের এক অসাধারণ সুযোগ।’
প্রতিনিধি দলে ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভাইস সেক্রেটারি জেনারেল হনাকো জিমি, রিউজি সাতোমি, কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য কেনটা ইজুমি, স্বতন্ত্র এমপি মাকিকো দোগোমি, মাকি ইকেদা, মামোরু উমেতানি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল-এর নির্বাহী বোর্ড সদস্য আতসুশি ওশিমা।
সাক্ষাতে বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।