ইসহাক দারকে সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার কথা বললেন ড. ইউনূস

বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি এবং তরুণ প্রজন্মের পারস্পরিক যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস |সংগৃহীত

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি, তরুণ প্রজন্মের পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপ-প্রধানমন্ত্রী দার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শেহবাজ শরিফের শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়ে বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসও উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়ে শরিফের সাথে অতীতে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি বার আমাদের সাক্ষাতে সার্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন, সার্ক আমাদের উভয়ের কাছেই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।’

ইসহাক দার দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের দুই অর্থনীতি পরিপূরক। বহু ক্ষেত্রে আমরা একসাথে কাজ করতে পারি।’ তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ও কমিউনিটি ভিত্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সৌভাগ্যবান যে- আপনার মতো একজন সরকারপ্রধান রয়েছে, আপনি এমন একজন নেতা যিনি বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেন।’

সফরকালে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বাণিজ্য ও জ্বালানি উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।

প্রধান উপদেষ্টা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি সার্ককে উৎসাহিত করি এবং পাকিস্তানসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের একটি হিসেবে দেখি।’

তিনি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘যখন পাকিস্তানি শিল্পীরা বাংলাদেশে গান পরিবেশনা করেন, সবাই তাদের প্রশংসা করে। এই চেতনার ওপরই আমাদের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।’

১৩ বছর পর বাংলাদেশ সফরে আসা পাকিস্তানের কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন ইসহাক দার। তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে নৌ ও বিমান যোগাযোগ উন্নত করার প্রচেষ্টা চলছে।

ইসহাক দার বলেন, ‘অক্টোবরের মধ্যে ফ্লাই জিন্নাহ ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া পিআইএও বেসরকারিকরণের পর ঢাকা রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে।’

বৈঠকে উভয় নেতা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে- বাণিজ্য বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়াকে আরো স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করবে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।