অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেলের সাথে সাক্ষাত করেছেন।
সোমবার জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে একটি হোটেলে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট বিষয়ে আলোচনা করেন ড. ইউনূস ও ক্যাথরিন রাসেল।
তাদের আলোচনার মূল বিষয় ছিল চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিবিরে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য মানবিক কার্যক্রমে তহবিল ঘাটতির বিষয়টি প্রাধান্য পায়। এই তহবিল কমে যাওয়ায় শিবিরের রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাসেবায় বড় প্রভাব ফেলবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তহবিল সঙ্কটকে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটির কারণে ইতোমধ্যেই বহু স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শিক্ষককে চাকরি হারাতে হয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস আরো বলেন, ‘এটি একটি বড় ধরণের বিপর্যয়। শিবিরের শিক্ষাব্যবস্থা শত শত হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জীবনে নতুন আশার আলো দেখিয়েছিল। ক্ষোভ আর ক্রোধ নিয়ে বড় হওয়া এসব শিশুদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ যেকোনো সময় যেকোনো দিকে তাদের রাগের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।’
ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক রাসেল বৈশ্বিক তহবিল পরিস্থিতি কঠিন বলে উল্লেখ করেন এবং জানান, প্রথাগতভাবে উদার হিসেবে পরিচিত ইউরোপীয় দেশগুলোও ইউনিসেফের মতো সংস্থার মানবিক তহবিলে অর্থ দেয়া কমিয়ে দিয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, রোহিঙ্গা যুবকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে, যাতে তারা শেষ পর্যন্ত সেই দক্ষতা দেশে ফিরে ব্যবহার করতে পারে।
সাক্ষাতে উপস্থিত ইউনিসেফের উপ-নির্বাহী পরিচালক টেড চাইবান রোহিঙ্গা শিবিরে শিক্ষার ইতিবাচক প্রভাবের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে শিক্ষার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।’
সাক্ষাতে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলন সম্পর্কেও আলোচনা হয়।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরের সাধারণ পরিষদ হলে শুরু হবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
আলোচনায় রোহিঙ্গা শিবিরে শিক্ষাব্যবস্থা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এবং সম্প্রসারণের জন্য শক্তিশালী প্রচার চালাতে ইউনিসেফের প্রতি আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র নেতা তাসনিম জারা এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
সূত্র : বাসস