রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনের রোডম্যাপ গড়বে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সাথে সংস্থাটির সদর দফতরে এক বৈঠকে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরের সাধারণ পরিষদ হলে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) শুরু হবে এই সম্মেলন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় নেতাই সঙ্কটের মূল বিষয়গুলো নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ক্রমশ অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি, বাংলাদেশের কক্সবাজারে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর প্রভাব ফেলে এমন আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, কেবল রোহিঙ্গা সঙ্কটকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সম্মেলন এবারই প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ সম্মেলন বিশেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য জরুরি তহবিল সংগ্রহে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাতে সহায়ক হবে।
গ্রান্ডি গত মাসে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনের প্রশংসা করেন, যেখানে প্রথমবার রোহিঙ্গা নেতারা চার দিনব্যাপী আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বাংলাদেশকে বিশেষ করে বৈশ্বিক শক্তিধর দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সঙ্কটের টেকসই সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে কূটনৈতিক কার্যক্রম আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ইউএনএইচসিআর প্রধানকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের চলমান শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।’
সূত্র : বাসস