ভারত যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় মন্তব্য করে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক না কেন, ভারত তার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের সর্ম্পক ভবিষ্যতমুখী হওয়া প্রয়োজন, অতীত আশ্রয়ী নয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতির (ডিকাব) প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময়ে বিক্রম মিশ্রি এ মন্তব্য করেন।
২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেয়া এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ভারতের কোনো শীর্ষ কূটনীতিক এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাথে খোলামেলা মতবিনিময় করলেন। এতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সোয়াল, যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) বি সাইয়ামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক শক্তিশালী থাকবে। বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ব্যাখ্যা নেই। তবে ৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ মেনে নিয়েই অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে আমরা বাস্তবসম্মত যোগাযোগ বজায় রাখতে চাই। দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের আমন্ত্রণে গ্লোবাল ভয়েসে যোগ দিয়েছেন (ভাচুয়ালি) ড. ইউনূস। বর্তমান সরকারের সাথে দৈনন্দিন কাজ চালানোর মতো সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। এই সরকারের পরবর্তী কাজ হবে দ্রুত একটি নির্বাচনের আয়োজনের করা, যার ঘোষণা ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দু’দেশের সম্পর্কের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিবৃতি বা পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুথান দমনে গণহত্যাসহ নৃশংসতার আশ্রয় নেয়ায় আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপরাধের বিচার চলছে। বিচার শেষ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই অবস্থায় ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন বলতে ভারত কি আওয়ামী লীগের কথাও বোঝাচ্ছে- প্রশ্ন করা হলে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘কোনো দেশের জাতীয় নির্বাচনের কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ও থাকে। তবে বাংলাদেশে কোন ধরনের সরকার থাকবে, তা দিন শেষে সে দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। আমরা বাংলাদেশের জনগণ দ্বারা নির্বাচিত যে কোনো সরকারের সাথেই কাজ করব।’