বাংলাদেশের পোশাক ও বস্ত্র শিল্পে মার্কিন তুলার ব্যবহার বাড়াতে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তুলা রফতানিকারকদের প্রতিনিধিদলের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার উত্তরা বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।
এতে যুক্তরাষ্ট্রের কটন ইউএসএ’র উদ্যোগে ইকম, কারগিল, এলডিসি, ওলাম এগ্রি, ক্যারোলিনা কটন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, স্ট্যাপলকটন কো-অপারেটিভ এবং কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ’র পক্ষে অংশ নেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান ও পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা।
বৈঠকে আলোচ্য প্রধান বিষয় ছিল মার্কিন বাজারে রফতানির ক্ষেত্রে নবঘোষিত শুল্ক সুবিধা কাজে লাগাতে বাংলাদেশে মার্কিন তুলার ব্যবহার বৃদ্ধি, কাঁচামাল সরবরাহ সহজ করা এবং বাণিজ্য নীতিগত সহযোগিতা দৃঢ় করা।
বৈঠকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতিতে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী পোশাক রফতানিতে ন্যূনতম ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আংশিক ছাড় পাওয়া যাবে। এ সুযোগকে ‘বড় সম্ভাবনা’ হিসেবে উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এটি আমাদের পণ্যকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করবে। তবে প্রক্রিয়া সম্পর্কে দ্রুত সরকারি স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন।’
মার্কিন প্রতিনিধিদলকে তিনি অনুরোধ জানান, এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দ্রুত সংগ্রহ করে সরবরাহ করতে, যাতে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা অবিলম্বে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
বিজিএমইএ সভাপতি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যবহৃত আমদানিকৃত তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, যা কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্বিগুণ বা তিনগুণে উন্নীত করা সম্ভব। এ জন্য মার্কিন তুলার গুণগত সুবিধা বিষয়ে গবেষণা ও তথ্য সরবরাহের প্রস্তাব করেন তিনি।
মার্কিন প্রতিনিধিরা জানান, বাংলাদেশ বিশ্ব বস্ত্রশিল্পে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং মার্কিন তুলা তার মান, স্থায়িত্ব ও নির্ভরযোগ্যতার জন্য বিশ্ববাজারে সুনাম অর্জন করেছে। তারা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে মান উন্নয়ন এবং শুল্ক সুবিধা বাস্তবায়নে সহায়তার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ তুলা সরবরাহ ব্যবস্থা দ্রুততর করতে লজিস্টিকস উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে আমদানিকৃত মার্কিন তুলার জন্য সম্ভাব্য গুদাম (ওয়্যারহাউজ) স্থাপনা নিয়ে আলোচনা করে। এছাড়া বাণিজ্যিক ডকুমেন্টেশন জটিলতা নিরসনে বিজিএমইএকে লিখিতভাবে বিষয়গুলো জানাতে মার্কিন প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হয়।
বিজিএমইএ মার্কিন সংস্থাগুলোর প্রতি মিল ও কারখানার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ইনোভেশন সেন্টারে গবেষণা সহযোগিতার অনুরোধ জানায়।
বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, নতুন বিনিয়োগ সুযোগ এবং টেক্সটাইল-পোশাক সেক্টরে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো জোরদারের প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
সূত্র : বাসস



