চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সদস্যদের সাথে মতবিনিময়কালে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন উল্লেখ করে সফররত পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেছেন, আগামী ২৪ আগস্ট উভয় দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনবিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। যার মাধ্যমে ব্যবসা ও বিনিয়োগের একটি রোড ম্যাপ প্রস্তুতির পরিকল্পনা রয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যতগুলো দেশের সাথে সংযুক্ত হওয়া সম্ভব, আমরা চেষ্টা করছি। পাকিস্তানের সাথে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি সকল ব্যবসায়ীরা তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধিকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হবেন।’
আজ শুক্রবার দুপুরে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সদস্যদের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান আরো বলেন, ‘বর্তমান পরিবর্তিত বৈশ্বিক অর্থনীতির ধারা আমাদের সামনে অনেক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করে দিয়েছে। পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা এদেশের ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক জোরদারে অত্যন্ত আগ্রহী। ব্যবসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন সম্ভাবনা চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং আরো প্রতিনিধিদল সফর করবেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের পাকিস্তানি ভিসা সহজীকরণের ব্যবস্থা হয়েছে এবং শিগগিরই সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে।’
স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, দু’দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও পাকিস্তান থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রফতানি মাত্র ৫৮ মিলিয়ন ডলার। তবে সাফটা এবং ডি-৮ পিটিএ কার্যকর করার পাশাপাশি উভয়দেশের মধ্যে ননট্যারিফ বাধাসমূহ হ্রাস করা, বিটুবি সংযোগ উৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব।
প্রচলিত পোশাক শিল্পের বাইরে ফার্মাসিউটিক্যালস ও হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি ও ডিজিটাল সেবা, লাইট ইঞ্জিনিয়াারিং ও শিপবিল্ডিং, এগ্রো ও ফুড প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় অন্যান্য বক্তারা দু’দেশের নিজস্ব পণ্য নিয়ে এক্সিবিশন ও ট্রেড শো আয়োজন, বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও বিভিন্ন এক্সেসরিজ আমদানিসহ শিক্ষা ও বিভিন্ন শিল্প খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার আহ্বান জানান।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, বিএসআরএম গ্রুপ চেয়ারম্যান আলী হুসেইন আকবর আলী, পান রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: একরামুল করিম চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, বিজিএমইএ পরিচালক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বাফা’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (মিজান) ও প্রান্তিক গ্রুপের এমডি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সরওয়ার প্রমুখ।
সূত্র : বাসস