সৌদি আরবের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা সৌদিয়া এয়ারলাইনস আজ ঢাকায় তাদের নতুন অত্যাধুনিক সিটি টিকিটিং অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে, যা বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
নতুন অফিসটি গুলশান এভিনিউয়ের ১৩৪ নম্বর ঠিকানায় সিম্পলট্রি আট্টালিকা ভবনের ১৬তম তলায় অবস্থিত। বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ জাফের এইচ বিন আবিয়া অফিসটি উদ্বোধন করেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সৌদিয়া এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক অঞ্চলের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট মুসায়েদ আলমুসায়েদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (পূর্ব ও পশ্চিম) সচিব ড. মো: নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ড. আবিয়া তার বক্তব্যে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন, যা পারস্পরিক মূল্যবোধ ও বন্ধুত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন এই সুবিধা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবে, ভ্রমণকে আরো সহজতর এবং হজ ও ওমরাহ যাত্রীসহ বাংলাদেশী ভ্রমণকারীদের জন্য উৎকৃষ্ট সেবা নিশ্চিত করবে।
ড. নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের বিমান খাতে সৌদিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘সৌদিয়া আমাদের বিমান খাতের একটি বিশ্বস্ত অংশীদার এবং এই নতুন বিনিয়োগ ভ্রমণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে, পাশাপাশি দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে।’
সৌদিয়ার বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার তারিক আলওয়াইদি জানান, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে যাত্রীদের চাহিদা পূরণে সৌদিয়া তাদের ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আমাদের নতুন অফিসে বিনিয়োগ সৌদিয়ার অঙ্গীকারের প্রতিফলন, যাতে আমরা আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের আরো দক্ষতা, আরাম ও সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারি।’
সৌদিয়ার বাংলাদেশে জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ জানান, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দীর্ঘপথের যাত্রায় সৌদিয়া একটি পছন্দের বিমান সংস্থায় পরিণত হয়েছে। একইসঙ্গে ‘সহজ স্টপওভার ভিসা’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে ওমরাহ যাত্রীদের জন্য সহজ ভ্রমণ সুবিধা প্রদান করছে, যা www.saudia.com-এ পাওয়া যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্মিত গুলশান অফিসটি সৌদিয়ার বাংলাদেশে সবচেয়ে উন্নত সুবিধাসম্পন্ন অফিস। এখানে সাধারণ যাত্রী, প্রিমিয়াম কেবিন যাত্রী এবং ‘আলফুরসান’ প্রোগ্রামের সদস্যদের (সৌদিয়ার ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ার প্রোগ্রাম) জন্য পৃথক কাউন্টার রয়েছে।
অফিসটিতে ট্রাভেল ট্রেড পার্টনারদের জন্য একটি নির্দিষ্ট মিটিং স্পেস এবং ট্রাভেল অ্যাজেন্টদের সাথে বিভিন্ন অফার পরিচিতি ও সংযুক্তি সেশনের জন্য প্রশিক্ষণ ও সম্মেলন কক্ষও রয়েছে।
এই সম্প্রসারণ যাত্রীদের প্রবেশাধিকার আরো সহজ করবে, অপেক্ষার সময় কমাবে এবং সর্বোপরি সামগ্রিক যাত্রা অভিজ্ঞতা উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন অফিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো সৌদিয়ার ডিজিটালাইজেশনের দিকে উন্নিত করা, যা যাত্রীদের জন্য আরো দ্রুত ও নির্ভুল সেবা নিশ্চিত করবে।
গুলশানের নতুন সুবিধার পাশাপাশি, সৌদিয়া তাদের বিদ্যমান সিটি টিকিটিং অফিসগুলোও যেমন- ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এবং চট্টগ্রামের বন্দরনগরী আগ্রাবাদে চালু রাখবে।
এই উদ্বোধন বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৫-এর দিনেই অনুষ্ঠিত হয়, যা সৌদি আরবের দ্রুত বিকাশমান পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে ‘উমরাহ্ প্লাস’ উদ্যোগের প্রতি তাদের অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা তাদের আধ্যাত্মিক যাত্রার সাথে সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতা যুক্ত করতে পারেন এবং এটি সৌদি আরবকে একটি বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করার বৃহত্তর ভিশনের অংশ। বাসস