বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত রিপোর্টে নাম আসার পর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের অপসারণ ও তার বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ’।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সংগঠনের সভাপতি ফরহাদ আহমেদ ডলার ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সেলিম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। একই দিন আইজিপির অপসারণ চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। একই দাবিতে পলাশীর মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
জানা গেছে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (ঢাকা-৮) নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কারাগারে মৃত্যু হয় তার। একসময়ের প্রভাবশালী এই রাজনীতিবিদের স্মরণে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ’ দীর্ঘদিন ধরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
গত রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা হত্যাযজ্ঞে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৮ জন সেনাসদস্য নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন। এ ঘটনায় সাত সদস্যের স্বাধীন জাতীয় কমিশন গঠন করা হয়েছিল গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর।
তদন্ত প্রতিবেদনের কপি অনুযায়ী, ১৪৬ নম্বর পয়েন্টের ‘গ’ অংশে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তারা হলেন তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ, তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি প্রধান) বাহারুল আলম, অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দ এবং তার অধীনস্থ তদন্ত দল।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্ত চলাকালে তৎকালীন এসবি প্রধান বাহারুল আলম কমিশনকে অনুমাননির্ভর তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিরোধী দলের কর্মীদের ফাঁসিয়েছেন। যার মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়।
স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, বিডিআর ট্র্যাজেডিতে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। বর্তমান আইজিপি যেহেতু তদন্ত তালিকায় অভিযুক্ত, তাই তার অবস্থান বিচারপ্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে স্মারকলিপিতে বলা হয়, নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে এবং সরকারের ওপর থাকা সন্দেহ দূর করতে বর্তমান আইজিপিকে অপসারণ ও গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করা জরুরি।
ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি, সচিবালয়-নিরাপত্তা বিভাগ) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, একটি মিছিল সচিবালয়ে এসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। এরপর তারা চলে গেছেন।
শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, বিক্ষোভ মিছিলটি প্রথমে সচিবালয়ের দিকে যায়, যেখানে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকে। পরে পুলিশের সমন্বয়ে মিছিলকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে পিন্টু হত্যার বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি দেয়।



