খিলগাঁওয়ে লেখক বাচ্চুকে মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ

রবিন ও রিপনের হামলা থেকে বাঁচতে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি খিলগাঁও থানায় তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রাশিদুল হাসান বাচ্চু। জিডির পর সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে উভয় পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাশিদুল হাসান বাচ্চু
রাশিদুল হাসান বাচ্চু |সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁও থানার পশ্চিম মেরাদিয়ার নবীনবাগ উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও লেখক রাশিদুল হাসান বাচ্চুকে মারধরের মামলা তুলে নিতে ও মানহানি মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বছরের ৩০ ডিসেম্বর নবীনবাগ এলাকায় সরকারি একটি রাস্তার কাজ চলছিল। একই এলাকার হাসান মাহমুদ রবিন ও তার ভাই আসিক মাহমুদ রিপন রাস্তার কাজে বাধা দেন। এসময় লেখক বাচ্চু কারণ জানতে চাইলে তার দিকে ওই দু’ভাই তেড়ে আসেন। পরে উপস্থিত জনতা রবিন ও রিপনকে ঘিরে ধরলে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আসে। রবিন ও রিপনের হামলা থেকে বাঁচতে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি খিলগাঁও থানায় তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রাশিদুল হাসান বাচ্চু। জিডির পর সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে উভয় পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দেন।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়, পরে গত ১৩ এপ্রিল রাস্তার কাজ চলাকালীন রবিন এসে আবারো কন্ট্রাক্টরের সহকারী মো: মান্নানকে রাস্তার কাজ বন্ধ করতে বলেন। তখন রাশিদুল হাসান বাচ্চু রাস্তার কাজ কেন বন্ধ করতে হবে জিজ্ঞেস করতেই রবিন তাকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুগদা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খিলগাঁও থানায় রবিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাচ্চু।

রাশিদুল হাসান বাচ্চু নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের কাজে তারা বাধা দিলে আমি প্রতিবাদ করি। রবিন বলে উঠে, বাচ্চুমাচ্চু কে? এরকম আচরণের কারণ জিজ্ঞেস করলে, রবিন আমাকে ঘুষি মারে এবং রাস্তার ইট তুলে আমাকে আঘাত করতে আসে। তখন সেখানে উপস্থিত কাজে সহায়তাকারী তানজিল রবিনকে দিয়ে জাপটে ধরে। আমি ঘটনাস্থল থেকে সরাসরি থানায় গেলে খিলগাঁও থানার ওসি আমার মুখে রক্ত দেখে হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে মুগদা সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।’

বাচ্চু অভিযোগ করে বলেন, ‘খিলগাঁও থানা অভিযুক্ত রবিনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে সিএমএম কোর্টে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কোর্ট আমাকে এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি থাকলে ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য পেশ করতে বলেন। আমি আদালতে উপস্থিত হয়ে প্রতিবেদনের বিপক্ষে বক্তব্য পেশ করে পুনঃ তদন্তের দাবি করলে আদালত সেটা মঞ্জুর করে আগামী ১৩ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে বলেন। এদিকে, রবিনের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আমার বিরুদ্ধে তার মানহানির মামলা করবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। রবিন ও রিপনরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কন্ট্রাক্টর মো: মান্নানের সহকারী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো: তানজিল নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশনের রাস্তার কাজ করছিলাম। তখন রবিন এসে কাজে বাধা দেন। পরে লেখক রাশিদুল হাসান বাচ্চুর সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা তাকে মারধর করেন। পরে আমিসহ উপস্থিত লোকজন তাকে থামানোর চেষ্টা করি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রবিনের ভাই আসিক মাহমুদ রিপন নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘ওনার সাথে তেমন কিছু হয়নি। তবে আমাদের গলির মাথায় স্যুয়ারেজ লাইনের একটি পাইপ বসানো ভুল হয়েছে বলে কন্ট্রাক্টরকে জানায় রবিন। তখন তিনি জানান বাচ্চু ভাই নাকি এভাবে দিতে বলেছেন। পরে রবিন জানায় বাচ্চু ভাই কে? সে কি এই কাজের কন্ট্রাক্টর নাকি। পরে বাচ্চু ভাই আমার ভাইকে গালি দেন। এতে করে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। কিন্তু কোনো ধরনের মারামারি হয়নি। পরে তিনি হাসপাতাল থেকে কাগজ নিয়ে থানায় মামলা করেন।’