ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৩৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আনোয়ার পৌর এলাকার চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে ও ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রোকনুজ্জামান জানান, ‘ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আনোয়ার হোসেনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা বাসে আগুন দিয়েছে।’
এদিকে আগুনে পুড়ে নিহত বাসচালক মো: জুলহাসের (৩০) ছোট বোন ময়না অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে মামলা করেছেন। এ মামলায় আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে সোমবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাস রাত ২টা ৪৫ মিনিটে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আসে। বাসটি তেল নেয়ার জন্য পেট্রল পাম্পের সামনে এলে সব যাত্রী নেমে যায়। এসময় ড্রাইভার বাসটি সেখানেই বন্ধ করে রেখে দেন। রাত বেশি হওয়ায় ভোরে নামবেন এমন চিন্তা করে চর রাধাকানাই গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রুমকি ও তার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদশা বাসের ভেতরেই থেকে যান। এসময় বাসের ভেতরেই ঘুমিয়ে পড়েন চালক জুলহাস।
রাত প্রায় সোয়া ৩টার সময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে বাসে আগুন দিয়ে দ্রুত চলে যায়। বাসে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ইসলাম ফিলিং স্টেশনের বিপরীত দিকের একটি শোরুমের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এতে দেখা যায়, রাত ৩টা ১৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের সময় দু’জন লোক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটির সামনে আসেন। একজনের মাথায় টুপি, অন্যজনের মুখ ও মাথা কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। এর ৩১ সেকেন্ড পর পেছন দিক থেকে আসে আরো এক ব্যক্তি। তারা বোতলে করে আনা তরল দাহ্য পদার্থ বাসটির সামনে ও ভেতরে চালকের আসনে ছিটিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তরা প্রথমে বাসের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে একটি লাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেটি বাসের ভেতরে ফেলে দিয়ে তারা দ্রুত চলে যায়। আগুন দেখতে পেয়ে বাদশা ও তার মা আহত অবস্থায় কোনো মতে বাস থেকে নেমে আসেন। এসময় বাসের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা ড্রাইভার জুলহাস দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।



