সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অ্যাজেন্ট উৎপল ও আজিজ গ্রেফতার

সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাংলাদেশ থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারে অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন উৎপল পাল ও দেশের সম্পদ দেখাশোনার করতেন মো: আবদুল আজিজ।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দু’জন অ্যাজেন্ট উৎপল পাল ও মো: আবদুল আজিজকে গ্রেফতার
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দু’জন অ্যাজেন্ট উৎপল পাল ও মো: আবদুল আজিজকে গ্রেফতার |সংগৃহীত

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আলোচিত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দু’জন অ্যাজেন্ট উৎপল পাল ও মো: আবদুল আজিজকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাদের আদালতে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ। এর আগে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাংলাদেশ থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারে অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করা আরামিট গ্রুপের এজিএম উৎপল পাল ও দেশের সম্পদ দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবদুল আজিজ।

চলতি বছরের ২৪ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: মশিউর রহমান চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে-১ এ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী, ভাই-বোন এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজ।

মো: মশিউর রহমান জানান, তাদের গ্রেফতারের পর ডবলমুরিং থানায় রাখা হয়।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে আরো জানা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশের সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী উৎপল পাল। তিনি জাবেদের দেশ থেকে দুবাই ও দুবাই থেকে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ, অর্থাৎ উৎপল পালকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখছে দুদক টিম। যদিও তিনি আরামিট পিএলসির কর্মচারী, কিন্তু সাবেক ভুমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ তৈরি, দেখাশোনার কাজ করেছেন। তার কাছ থেকে জব্দ করা দু’টি ল্যাপটপ ও দু’টি মোবাইল থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা ফরেনসিক করার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আব্দুল আজিজ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেন।

এদিকে অর্ধডজন মামলার আসামি সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়োনা জারির জন্য আবেদন করেছে দুদক। যা এখন প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে। প্রায় ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামানসহ অর্ধশত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার তদন্ত চলমান।

জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী রুকমীলার নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের আদালত। এছাড়া গত ৫ মার্চ অপর এক আদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে তাদের ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে।

অপর আদেশে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইফুজ্জামানের ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দেরও আদেশ দেন আদালত। আর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত।

সূত্র : বাসস