বোয়ালমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ

বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান ধর্মঘট করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

Location :

Boalmari
বোয়ালমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ
বোয়ালমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ |নয়া দিগন্ত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান ধর্মঘট করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভার ওয়াপদা মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে শতশত যানবাহন আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সদ্য ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের পদে থাকা ব্যক্তিদের স্থান দেয়া হয়েছে, অথচ যারা বিএনপির আদর্শে অনুগত থেকে বছরের পর বছর হামলা-মামলা, নির্যাতন ও জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, তাদের বাদ দেয়া এবং অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’

বক্তারা আরো হুঁশিয়ারি দেন, ‘আওয়ামী লীগপন্থী এই কমিটি বাতিল না হলে ফরিদপুর-১ আসনে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে।’

তারা আরো বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য একাধিকবার বহিস্কৃত খন্দকার নাসিরুল ইসলাম মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পদধারী একাধিক ব্যক্তিকে বিএনপির নেতৃত্বে এনেছেন। যারা বিগত ১৭ বছর নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল তাদের সেই অপকর্ম ঢাকতে বিএনপির কমিটিতে পদপদবী দেয়া হয়েছে। এটি শুধু দলের প্রতি নয়, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিও অসম্মান।’

ফরিদপুর-১ আসনে (বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা) বিএনপির দুটি প্রভাবশালী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে বিএনপিতে আসা নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

অপরদিকে ছাত্রদল যুবদল থেকে উঠে আসা নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ভিপি সামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলে জানা যায়।

গত ২৩ অক্টোবর রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপনের স্বাক্ষরে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নতুন করে প্রকাশ্যে আসে।‘

বিক্ষোভ ও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবু, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন মিলু মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ডা: আব্দুস সবুর, পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কালা মিয়া, বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস ও বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, বিএনপি নেতা ও বার বার নির্বাচিত সাবেক মেম্বার এনায়েত হোসেন, মফিজুর কাদের খান মিল্টন, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হক, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ও উপজেলা জাসাসের আহ্বায়ক মো: শাহিন আনোয়ার, রুপাপাত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো: আবুল কালাম, চতুল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একলিম শরীফ, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হোসেন সালেহ্ রুবেল, ছাত্রদল নেতা জাকারিয়া মোল্যা সুমন, জুয়েল, সাদমান পাপ্পু প্রমুখ।

বিক্ষোভ শেষে নেতাকর্মীরা ঘোষণা দেন, কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান ধর্মঘট ও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।