ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার চৌমুখা এলাকায় শতবর্ষী এক মায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তারই ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ছেলে নিরঞ্জন ভৌমিক (অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ও তার স্ত্রী মিলে বৃদ্ধ মাকে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য নানাভাবে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার এই অসহায় মায়ের বয়স প্রায় ১১০ বছর। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর ধরে তাকে অনাহারে রাখা হয়, ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি পুত্রবধূ তাকে বিষ খাইয়ে হত্যার হুমকিও দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা ভবন নির্মাণ করলেও বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হয়নি সেই বাড়িতে। তাকে রাখা হয়েছে একটি জরাজীর্ণ টিনের ছোট ঘরে, যেখানে মশা, মাছি, ইঁদুর ও তেলাপোকায় ভরা পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মলিন চোখে ভাঙা কণ্ঠে ওই বৃদ্ধা বলেন,‘কী বাবা কিছু বলবা?’ তিনি জানান, ছেলে ও পুত্রবধূ প্রতিদিন গালিগালাজ করেন এবং মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকালে নিরঞ্জন ভৌমিকের বাড়ির আশেপাশে থাকাকালীন তিনি বৃদ্ধাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার দৃশ্য দেখেন। পরে বৃদ্ধা কিছুক্ষণ অন্য বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ফিরে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্যই এই অমানবিক আচরণ চালিয়ে যাচ্ছেন পাষণ্ড ছেলে ও তার স্ত্রী। ভুক্তভোগী মায়ের জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দবিরউদ্দিন বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। দ্রুতই এই অসহায় মায়ের খোঁজখবর নেব। তার উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং এ বিষয়ে তার ছেলের সাথেও কথা বলব।