দীর্ঘ ছয় বছর পর অবশেষে আগামী ৩০ আগস্ট (শনিবার) নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। উৎসব মুখর এই সম্মেলনের কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় আপাতত ভাটা পড়েছে।
আওয়ামী লীগের দুঃশাসনামলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, হত্যাসহ নানাভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কোনো কর্মকান্ড চালাতে পারেননি নেতাকর্মীরা। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মুক্ত পরিবেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা এখন মুক্ত পরিবেশে রাজনৈতিক কর্মতৎপড়তা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
বিএনপির এই দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে প্রার্থীদের রংবেরংয়ের ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে গেছে গোটা শহর। থানায় থানায় চলছে শোডাউন। প্রার্থীরা গণসংযোগ, সভা, সমাবেশসহ নানান তৎপড়তা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের কাছে যাচ্ছেন। তাদের মন জয়ে দিনরাত আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
২০১৯ সালের ৬ আগস্ট প্রখ্যাত অর্থোপেডিক অধ্যাপক ডা: মো: আনোয়ারুল হককে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম হিলালীকে সদস্যসচিব করে যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটি দিয়েই এতদিন দলের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে এসেছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় অনেকের মাঝে চাপা ক্ষোভেরও সঞ্চার হয়েছিল। তদুপরি বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারি হিসেবে স্বচ্ছ ইমেজের ডা: আনোরুল হক দলের হাল ধরে রেখেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের পাশে থেকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। মতবিরোধ ও কয়েক গ্রুপে বিভক্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। দলীয় কার্যালয়সহ তার বাসা ও ক্লিনিকে একাধিকবার হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। তবুও তিনি দুঃসময়ে হাল ছাড়েননি।
জেলা বিএনপির এই সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা: আনোয়ারুল হক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক। মাহফুজুল হক শুরু থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার পিতা ছিলেন দেশবিখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত মাওলানা মঞ্জুরুল হক (র:)। সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তারা হলেন, জেলা বিএনপির সদা হাস্যজ্জল যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এ এস এম মনিরুজ্জামান দুদু, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী ও জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাঠের সৈনিক আব্দুল্লাহ-আল-মামুন খান রুনি। তিনি সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন খানের ছেলে।
দলের নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন, উৎসব মুখর পরিবেশে এই সম্মেলন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। মোট কাউন্সিলর ১৫১৫ জন। আগামী ৩০ আগস্ট শনিবার স্থানীয় ঐতিহাসিক মোক্তার পাড়া মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এই সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বাংলাদেশ আইনজীবী ফোরাম নেত্রকোনা শাখার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম এ আওয়াল সেলিম নয়া দিগন্তকে জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখবেন।