পদ্মা সেতুতে ক্যাশলেস ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) পদ্ধতিতে টোল আদায়ের পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা অতিক্রম করেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ট্রাস্ট ব্যাংকের ‘ট্যাপ’ অ্যাপের মাধ্যমে ইটিসি সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৬৪৮টি যানবাহন এই পদ্ধতিতে সেতু পারাপার হয়েছে, যার মাধ্যমে আদায় হয়েছে ৫১ লাখ ৬০০ টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে চালু হওয়া এই আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস টোল আদায় পদ্ধতি দেশের টোল ব্যবস্থাপনাকে আরো দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল রূপ দিয়েছে। ট্রাস্ট ব্যাংকের ‘ট্যাপ’ অ্যাপ ছাড়াও বর্তমানে বিকাশ ও মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। পাশাপাশি নগদ ও রকেট অ্যাপ যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ নিলয় জানান, ইটিসি পদ্ধতিতে সেতু পারাপারে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ইমাদ ও দোলা পরিবহনের বাসসহ প্রাইভেটকার, পিকআপ ও মাইক্রোবাস মিলিয়ে ১৪৭টি যানবাহন ইটিসি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। এসব যানবাহনকে আর লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, দেশের সব পরিবহন যদি বিআরটিএ অনুমোদিত ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও ট্যাগ ব্যবহার করে, তাহলে ইটিসি ব্যবস্থার সুফল আরো ব্যাপকভাবে পাওয়া যাবে।
সূত্রে জানা গেছে, বিকাশ অ্যাপে গিয়ে ‘টোল’ অপশনের অধীনে ‘মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন’ অপশনে প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ চার ডিজিট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে প্রাপ্ত ‘একপাস আইডি’ ব্যবহার করে ‘ডি-টোল টপ-আপ’ সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হয়। এরপর মাওয়া টোল প্লাজার রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত আরএফআইডি ট্যাগ যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হয়। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার গতিতে ইটিসি লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে সেতু পার হতে পারে।
সেতু বিভাগ আরো জানায়, ভবিষ্যতে আরো বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (এটুআই) সহায়তায় নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ চলছে।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে ইটিসি চালু হওয়ায় টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও ডিজিটাল হয়েছে। এটি দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’



