রাজবাড়ীর পাংশায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিষধর গোখরা সাপের কামড় খেয়ে সাপ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসেছেন তিনজন। তারা এসেছেন পৃথক তিনটি এলাকা থেকে।
রোববার সন্ধ্যায় ও সোমবার সকালে উপজেলার কশবামাজাইল ও যশাই ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনজনই পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: এবাদত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সাপে কাটা তিন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। তারা সবাই বিষধর গোখরা সাপ সাথে করে নিয়ে এসেছে। রোগীদের মধ্যে বিষাক্ত সাপে কাটার লক্ষণ রয়েছে। রোগীদের আমরা অবজারভেশনে রেখেছি। তবে এখনো রোগীদের মধ্যে বিষক্রিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়নি, তাই অ্যান্টিস্নেক ভেনম প্রয়োগ করা হয়নি। আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে (৪০ ভায়াল) অ্যান্টিস্নেক ভেনম মজুদ রয়েছে। রোগীদের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তাদের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ভেনম প্রয়োগ করা হবে।’
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রব বাড়ে। এ সময় বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। সাপে কামড় দিলে কবিরাজের কাছে না গিয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে হবে।’
সাপে কাটা রোগীরা হলেন, উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের সুবর্ণখোলা গ্রামের মৃত হাতেম মন্ডলের ছেলে কৃষক আজিজ মন্ডল (৬৫), একই ইউনিয়নের নাদুরিয়া গ্রামের মো: শহিদুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫৫) ও উপজেলার যশাই ইউনিয়নের চর-লক্ষীপুর গ্রামের তারেক শেখের ছেলে আসিফ শেখ (১৮)।
সাপে কাটা রোগী কৃষক আজিজ মন্ডল বলেন, ‘সকালে পাঠ জাগ দেয়ার সময় পাটের সাথে একটি সাপের বাচ্চা ছিল আমি দেখি নাই। পাট ধরার সাথে সাথেই সাপের বাচ্চাটি আমার ডান হাতে কামড় দেয়। পরে সাপটি মেরে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তারা জানায় সাপটি গোখরা সাপের বাচ্চা।’
সাপে কাটা অপর রোগী হাসিনা খাতুন বলেন, ‘সকালে ভাত রান্না করার সময় আমার পায়ে পিঁপড়ার মতো কিছু একটা কামড় দেয়। তাকিয়ে দেখি একটি সাপে কামড় দিয়েছে। তখন বাড়ির সবাই সাপটিকে মেরে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
এ সময় তার ছেলে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়ির পাশের একটি বাড়ি থেকে সাপের ৩৬টি ডিমের খোষা ও ১৭টি সাপের বাচ্চা উদ্ধার করা। ১৯টি সাপের বাচ্চার খোঁজ পাওয়া যাই নাই। এই বাচ্চাগুলো বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বাচ্চাই আমার মাকে কামড় দিয়েছে।’
অপর রোগী আসিফ শেখ বলেন, ‘রাতে আমাদের বাড়ির পাশে একটি ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় আমার পায়ে কিছু একটা কামড় দেয়। এ সময় লাইট মেরে দেখি সাপ। পরে সাপটি মেরে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার চিকিৎসা দিয়েছে বর্তমানে ভালো আছি।’