ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে হবিগঞ্জে কনটেন্ট ক্রিয়েটর স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর-এর আদেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরের দিকে হবিগঞ্জের আইনজীবী সেলিম আহমেদ এ মামলা করেন। এ ঘটনায় চুনারুঘাট উপজেলার ছয়শ্রী গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী মুক্তা আক্তারকে আসামি করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তাদের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন অনেকে। ভিডিওটিতে সুরা ফাতেহাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এই কনটেন্ট মানুষের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইব্রাহিম নামাজে যাচ্ছিল, এ সময় মুক্তা বারান্দার সিঁড়িতে বসে থালায় চাউল খুটছিল। ইব্রাহিমের ধাক্কায় থালা পড়ে গেলে মুক্তা ব্যঙ্গ করার স্বরে বলে ওঠে মা-লিকী ইউমিদ্দিন, জবাবে ইব্রাহিম বলছে, ‘ইয়্যাকা না’বুদু ওইয়্যাকা নাস্তাঈন।’ আমি নামাজ পড়তে যাই। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হাসাহাসি হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। মুক্তা আক্তার ওরফে পাঙাস মুক্তা আর ইব্রাহিম চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ইকরতলি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তাদের পূর্ববাড়ি আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ ছয়শ্রী গ্রামে। একসময় ইব্রাহিম কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। বিগত কয়েক বছর ধরে নানা বিতর্কিত কনটেন্ট তৈরি করে আলোচনায় আসে এবং কোটি টাকার মালিক হয়। এর মধ্যে পাঙাস মুক্তা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মুক্তা বিগত উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারায়। তার সাথে আট থেকে ১০ জনের একটি কনটেন্ট তৈরির বাহিনী রয়েছে। যাদের কাজই হচ্ছে বিতর্কিত কনটেন্ট তৈরি করা।
এ বিষয়ে মুফতি হাফেজ নাছির উদ্দিন জানান, ‘বিষয়টি পবিত্র কোরআন শরীফকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। যা কুফরির শামিল। এদিকে গত রোববার বিষয়টি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলে চুনারুঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতিবাদ জানান। অনেকে প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যান চুনারুঘাট উপজেলার তৌহিদী জনতা।
এদিকে অভিযুক্ত দু’জন লাইভে এসে ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু তৌহিদী জনতা তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। তাদের ধরতে কয়েক দফা অভিযান চালালেও পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার আইনজীবী সেলিম আহমেদ বলেন, ‘মুসলমান হিসেবে সকলের ধর্মানুভূতিতে আঘাত আনা হয়েছে। তাদের শাস্তির দাবিতে মামলা করা হয়েছে।’