চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার শিয়ালমারী পশুরহাট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম কোরবানির হাট হিসেবে পরিচিত। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় ঈদের আগের শেষ হাট। আর এই শেষ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার উপচে পড়া ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে গোটা হাট এলাকা।
সকাল ৮টা থেকেই গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়াসহ বিভিন্ন কোরবানির পশু আসতে থাকে হাটে। দুপুর ১২টার মধ্যেই হাটের প্রতিটি প্রান্ত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পশুতে। একইসাথে হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে হাটে একপ্রকার গমগমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে হাটজুড়ে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। তদারকির জন্য দায়িত্ব পালন করে যৌথবাহিনীর একটি টিমও। হাটের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মাওলা (বিপিএম-সেবা) উপস্থিত ছিলেন।
তারা হাট পরিদর্শনকালে পশু ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানান।
হাটে আগত ক্রেতা মমিন উদ্দিন জানান, ‘আজই (বৃহস্পতিবার) শেষ হাট। তাই ঘুরেঘুরে দেখছি, ভালো গরু পেলে কিনে নেবো। পশুর সংখ্যা অনেক, দামও মোটামুটি সহনীয়। তবে প্রচণ্ড গরমে হাটে অবস্থান করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’
অন্যদিকে বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, ‘বাজারে দু’টি গরু এনেছি। ক্রেতার উপস্থিতি ভালো, দামও খারাপ নয়। তবে বিক্রি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। এই বছর গরুর দাম তুলনামূলক কম, কিন্তু খাজনা অনেক বেশি নিতে হচ্ছে।’
দৌলতগঞ্জ থেকে আসা আব্দুস সবুর বলেন, ‘হাটে গরুর সংখ্যা সন্তোষজনক, এখন ভালো দামে কিনে বাড়ি ফিরতে পারলেই হয়। তবে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় খাজনা নিয়ে একটু ঝামেলা দেখা যাচ্ছে।’
খাজনার বিষয়টি নিয়েও চলছে আলোচনা। হাটে গরু প্রতি বিক্রেতা ও ক্রেতার কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে এবং ছাগলের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা করে খাজনা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উথলীর ভোটন ও বাঁকা গ্রামের লালচাঁদ।
এ প্রসঙ্গে হাটের অন্যতম মালিক সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘এবারের শেষ হাটে ব্যাপক ভিড় হয়েছে। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। খাজনা বাড়তি নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, শিয়ালমারী পশুহাট জেলা তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বড় পশুহাট। আজকের হাটে প্রচুর পশুর আমদানি হয়েছে। পরিদর্শনকালে কোনো অসন্তোষ বা অভিযোগ পাওয়া যায়নি। হাটের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক রয়েছে।