বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড এম এ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাহিদুর রহমান সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড সিকিউরিটি (বিএসএফ) কর্তৃক ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দরা বলেন, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও ভারতের বিএসএফ কর্তৃক অব্যাহতভাবে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে।’
তারা বলেন, সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বিগত দশকে আট শতাধিক বাংলাদেশী নাগরিককে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। চলতি বছরে ২৮ জনকে হত্যা করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ৩০ গজ ভিতরে সবুজ ইসলাম এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সীমান্ত এলাকায় গরু চরানোর সময় সুকিরামকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইনে কোনো বাহিনীকে বিশ্বের কোথাও নিরস্ত্র বা বেসামরিক নাগরিকদের গুলি করার অনুমতি দেয়া হয়নি। সীমান্তে কোনো লেথাল উইপেন ব্যবহার করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও ভারতের বিএসএপের গুলিতে নিরীহ বাংলাদেশীরা প্রাণ হারাচ্ছে। বিএসএফ -এর পক্ষ থেকে বার বার হত্যার শিকার বাংলাদেশীদেরকে গরু চোরাচালানকারী ও অনুপ্রবেশকারী বা অপরাধী হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়। চোরাচালানকারী বা অনুপ্রবেশকারী হলেও গুলি করে হত্যা করার বিষয় কোনো দেশের আইনে নেই। অপরাধী হলে তাদের গ্রেফতার করে প্রচলিত আইনে বিচার করতে পারে। কিন্তু বিএসএফ ক্রমাগত বাংলাদেশীদের হত্যা করে চলেছে যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
নেতারা বলেন, সীমান্তে হত্যার শিকার বেশিভাগই সীমান্তবর্তী এলাকার দরিদ্র মানুষ। অনেকে কৃষি কাজ করতে গিয়ে ভুলবশত জিরো লাইনের কাছে চলে গেলে গুলি বর্ষণের শিকার হয়। ফেলানীর লাশ সীমান্তে কাঁটাতারে ঝুলে থাকার ঘটনা বাংলাদেশীরা কোনোদিন ভুলতে পারবে না। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
বিবৃতিতে নেতারা সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে না পারাকে বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিক ব্যর্থতাকে দায়ী করে বলেন, অবিলম্বে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে দ্বিপক্ষীয় এমনকি আন্তর্জাতিক ফোরামে তোলার জোর দাবি জানান।
নেতার সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বন্ধে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন দিতে হচ্ছে।’
-বিজ্ঞপ্তি



