জুলাই বিপ্লব না হলে এদেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে তাড়ানো যেত না মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হয়েছেন। ১৯৮২ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এরপর জাতীয় পার্টি নামের আরেকটি দলের জন্ম হয়। এই দলটি সব সময়ই ফ্যাসিস্ট হাসিনার চামচামি করতেন। এখন এই দলটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। জনগণের সাথে যারা জুলুম করবেন তাদের পরিণতি হাসিনার মতোই হবে।’
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে বাউফল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লবে শহীদ, আহত যোদ্ধা ও সাংবাদিকদের সম্মানে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা অধ্যায়ের সমাপ্তি করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর যারা আহত হয়েছেন, আমি তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে পটুয়াখালী জেলায় ১৪ জন শহীদ হয়েছে। তার মধ্যে ছয়জন আমার এই বাউফলের সন্তান। বাউফলের মানুষ যে অবস্থায় ছিলেন সেখানে থেকেই জুলাই বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন আমি তাদের প্রতি নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১০ টাকা কেজি চাল দেয়ার ওয়াদা দিয়ে ক্ষমতায় এসে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন। হাসিনা সরকারের লুটপাটের কারণে দেশে যখন অস্থিরতা দেখা দেয় তখন ছাত্র-জনতা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। আর এই বিপ্লব ব্যর্থ হলে আমাদেরকে জীবিত রাখা হতো না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির সব জায়গায় কমিটি হয়নি। ঈদের পর আমরা বাউফলের একটি সুন্দর কমিটি উপহার দিব। তিনি সম্প্রতি বাউফলে খুন, লুটপাট ও ধর্ষণের মতো ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাউফল থানার ওসির উদ্দেশে বলেন, ‘অপরাধী যে দলেরই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এভাবে চলতে থাকলে এই বাউফলের শান্তি বিনষ্ট হবে।’
এ সময় মুজাহহিদুল ইসলাম শাহিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের কোনো সদস্যকে কেউ হয়রানি করলে তাদেরকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আপনারা কোনো দুর্বৃত্তকে দলে আশ্রয় দিবেন না। কারণ তারা অপকর্ম করলে তার দায় দলকেই বহন করতে হবে।’
অধ্যাপক আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, শহীদ মেহেদি হাসানের বাবা মোশারেফ হোসেন। ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুজ্জামান সুপন, বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরুজ্জামান বাচ্চু, বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি জলিলুর রহমান, বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। এছাড়া অতিথি ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলামের শ্বশুর মো: হারুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো: মিজানুর রহমান।