মানিকগঞ্জে ফ্ল্যাট থেকে মা ও ২ সন্তানের লাশ উদ্ধার

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার যৌথ মালিকানাধীন মুক্তাদির এবং রাহাত সালমানের বাসা থেকে এই তিন লাশ উদ্ধার করা হয়।

মো: শাহানুর ইসলাম, মানিকগঞ্জ

Location :

Manikganj
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা |নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা আবাসিক এলাকার একটি ভবনের ফ্ল্যাট থেকে মা ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, বাচ্চাদের বিষপান করিয়ে মা নিজেও বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার যৌথ মালিকানাধীন মুক্তাদির এবং রাহাত সালমানের বাসা থেকে এই তিন লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- মা শেখা আক্তার (২৯), ছেলে আরাফাত ইসলাম আলভী (৯) এবং ছোট মেয়ে সাইফা আক্তার (২)।

জানা গেছে, মৃত শিখা আক্তার প্রবাসী শাহীন আহমেদের (৪২) স্ত্রী। শাহিন দুই মাস আগে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছেন। এর আগে তিনি এলাকায় ইজিবাইক চালাতেন। প্রবাসী শাহীন আহমেদ বছর পাঁচেক আগে শিখা আক্তারকে বিয়ে করেন। এটি ছিল শাহীন ও শিখা আক্তার দম্পতির দ্বিতীয় বিয়ে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন বলেন, ‘বন্ধ ফ্লাট থেকে তিন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; মা ও দুই সন্তানের। ঘটনাস্থল থেকে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের উপকরণ মিলেছে। যেহেতু ফ্ল্যাট ভেতর থেকে তালাবদ্ধ ছিল সেহেতু দুই শিশুসন্তানকে বিষপান করিয়ে মা নিজে বিষপান করেছেন, বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকিটা ময়নাতদন্তে জানা যাবে। দাম্পত্য কলহ থেকেই এ ঘটনা ঘটতে পারে।’

স্বামী শাহিন আহমেদের মামা আমান আনসারী (৪৮) বলেন, ‘শাহিনের বাবা-মা নেই। বোনের বাড়ি হরিরামপুরের লেছরাগঞ্জ থেকেছে। প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী শিখা আক্তারকে পাঁচ বছর আগে বিয়ে করে শাহিন। এ ঘরে তার এক কন্যাসন্তান। দেশে থাকা অবস্থায় শাহিন ইজিবাইক চালাত, গেল এক মাস ধরে সে মালয়েশিয়া গেছে। যাওয়ার আগে সে তার স্ত্রী-সন্তানদের ভাড়া বাসায় তোলে। এ বাসায় শিখা আক্তারের আগের ঘরের নয় বছর বয়সী ছেলেসন্তানও থাকতো।’

প্রতিবেশী এক ভাড়াটিয়া বলেন, ‘মাস দেড়েক হয় তারা ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছেন। একবারই তার স্বামীকে দেখেছিলাম। পরে শিখা ও তার ছেলে-মেয়ে এ বাসায় থাকেন। তাদের বাসার বাইরে কখনো দেখা যায়নি। বিদ্যুৎ বিলের টাকা চাওয়ার জন্য আজ সকাল তার দরজায় নক করলে কোন সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। কয়েক দফায় চেষ্টার পরেও কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি অবগত করি। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-তে ফোন দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে খাটের উপর মা এবং মেঝেতে দুই শিশুর লাশ পায়।