যশোর জেলা খাদ্যবিভাগের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত

যশোর জেলা খাদ্যবিভাগের বিরুদ্ধে করা পাঁচটি অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। দুদকে করা এসব অভিযোগ শুনানির পর মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এম আইউব, যশোর অফিস

Location :

Jashore
যশোর জেলা খাদ্যবিভাগ
যশোর জেলা খাদ্যবিভাগ |নয়া দিগন্ত

যশোর জেলা খাদ্যবিভাগের বিরুদ্ধে করা পাঁচটি অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। দুদকে করা এসব অভিযোগ শুনানির পর মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ কারণে দুদকের পক্ষ থেকে সবগুলো অভিযোগ খারিজ করে দেয়া হয়েছে।

দুদকে জমা হওয়া অভিযোগের জবাবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান লিখিতভাবে দুদককে জানিয়েছেন, যশোর জেলার ১০টি এলএসডিতে ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য লোটাস এন্টারপ্রাইজ খুলনাকে শ্রম ও হস্তার্পণ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধির মাধ্যমে যশোর জেলার ১০টি এলএসডিতে শ্রম ও হস্তার্পণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লোটার এন্টারপ্রাইজ সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করে। যার মামলা নম্বর দেওয়ানি ৯১৩/২১। মামলাটি আদালত নামঞ্জুর করেন।

এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হলে এবং মামলা না থাকলে মাস্টাররোলের মাধ্যমে শ্রম ও হস্তার্পণ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা আসে। তারই আলোকে ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মাস্টাররোলে শ্রম ও হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলার ১০টি এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর লোটাস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সেলিম রেজা মাস্টাররোলে কাজ করানোর আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। তার রিট পিটিশনটি গত ১৪ মে হাইকোর্টে ‘ননপ্রসিকিউশন’ হয়েছে।

এরপরও সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে খাদ্যবিভাগের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার না হওয়া স্বত্ত্বেও মেসার্স ইয়াসির এন্টারপ্রাইজের মালিক মিজানুর রহমান খান হাইকোর্টে আরো একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। ওই রিট পিটিশন শুনানির পর আদালত তিন মাসের জন্য মাস্টাররোলে কাজ করার উপর স্থিতিবস্থায় থাকার আদেশ জারি করেন গত ২১ এপ্রিল। তিনমাস স্থিতিবস্থার পর ৩ আগস্ট ফের আরো তিন মাসের স্থিতিবস্থার আদেশ জারি করেছেন উচ্চ আদালত।

এরমধ্যে এয়ার মোহাম্মদ অ্যান্ড ব্রাদার্স গং খাদ্যসচিবসহ ছয়জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট করে। ওই রিটে সর্বশেষ, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করার আদেশ দিয়েছেন। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে যশোর জেলা খাদ্যবিভাগ ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই মোতাবেক তুলনামূলক দর নির্ধারণের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক। অতিদ্রুত ঠিকাদার নিয়োগের জন্য গত ২৩ অক্টোবর দরপত্র মূল্যায়ন ও সুপারিশ প্রণয়ন কমিটির দরপত্র আহ্বান ও প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সভার নোটিশ জারি করা হয়েছে। ফলে, ইচ্ছেকৃতভাবে মাস্টাররোলে কাজ করানোর অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। সমুদয় কাগজপত্র বিশ্লেষণ এবং শুনানি করে দুদক মিজানুর রহমান খানের আনিত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।

একইসাথে সরকারি অর্থ অপচয় রোধে খাদ্য বিভাগ সঠিক কাজটিই করেছে বলে দুদক কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।

ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে একের পর এক রিট পিটিশন যে করা হয়েছে তা দুদকের শুনানিতে স্পষ্ট হয়েছে। এর বাইরে ওএমএস ডিলার নিয়োগ সংক্রান্ত আরো চারটি অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে দুদক।