সীমান্তে মানবিকতা : পূরণ হলো পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা

তার শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর যেন বাংলাদেশে থাকা তার নানাবাড়ির স্বজনরা অন্তত এক নজর তার লাশটি দেখতে পারে।

ওয়াজেদুল হক, মেহেরপুর

Location :

Meherpur
সীমান্তে বিএসএফ-বিজিবির আন্তরিকতায় পূরণ হয় পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা
সীমান্তে বিএসএফ-বিজিবির আন্তরিকতায় পূরণ হয় পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা |নয়া দিগন্ত

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আন্তরিকতায় পূরণ হলো ভারতের পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা। ভারতের নদিয়া জেলার চাপড়া থানার হৃদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত জামাত শেখের স্ত্রী পচি খাতুন (৬৫)। তার শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর যেন বাংলাদেশে থাকা তার নানাবাড়ির স্বজনরা অন্তত এক নজর তার লাশটি দেখতে পারে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে তার মৃত্যু হলে তার পরিবার-পরিজন তার শেষ ইচ্ছার কথা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে জানায়। তারা অনুরোধ করেন পচি খাতুনের ইচ্ছা পূরণের জন্য। বিএসএফ তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সাথে যোগাযোগ করে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় মৃত পচি খাতুনের ইচ্ছা পূরণ হয়।

শনিবার সকালে ভারতের হৃদয়পুর থেকে বিএসএফ সদস্যদের সহযোগিতায় পচি খাতুনের লাশ আনা হয় মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়ক সীমান্তের ১২৫ নম্বর মেইন পিলারের কাছে। মুজিবনগর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার আবুল বাশার এবং ভারতের চাপড়া কোম্পানির বিএসএফ কমান্ডার মিঠুন কুমারের নেতৃত্বে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আন্তরিকতা দেখিয়ে লাশটি স্বজনদের দেখাতে সিদ্ধান্ত নেয়।

পরে লাশটি এনে মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর নতুনপাড়ায় তার নিকটাত্মীয়দের দেখার ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ২৫ মিনিট লাশটি সীমান্তে রাখা হয়। এ সময় আত্মীয়-স্বজনসহ আশপাশের অনেক মানুষ পচি খাতুনকে শেষবারের মতো দেখে বিদায় জানান। পরে লাশটি কবরস্থ করার জন্য আবার ভারতে ফিরিয়ে নেয়া হয়।

পচি খাতুনের স্বজন সোহরাব হোসেন বলেন, ‘তার খালা দীর্ঘদিন রোগভোগের পর গত ভোররাতে মারা গেছেন। সীমান্তে তারকাটার বেড়ার কারণে সেটা এখন সবার জন্য দূরদেশ। ফোনে কথাবার্তা হতো। স্বচেক্ষে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। খালা আজ আল্লার ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন।’ বিজিবি-বিএসএফের আন্তরিকায় খালার লাশটি দেখার সুযোগ পান তিনি ও তার স্বজনেরা। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।