মৌলভীবাজারের সিলেট–আখাউড়া রেলপথের বিভিন্ন স্টেশনসংলগ্ন বিপুল পরিমাণ রেলের জমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, শমশেরনগর, ভানুগাছসহ মোট ৯টি স্টেশনের পাশে জমিগুলো ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা হলেও রেলওয়ে কোনো ভাড়া বা রাজস্ব পাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বরে) অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমশেরনগর ও কুলাউড়া—এই চারটি সচল স্টেশনের পাশাপাশি বন্ধ স্টেশন মনু, টিলাগাঁও, ভাটেরা, লংলা ও বরমচালেও একই চিত্র। লিজকৃত কিছু জায়গা থাকলেও উল্লেখযোগ্য অংশে অবৈধভাবে আধাপাকা স্থাপনা, দোকান, বসতঘর এমনকি কৃষিখামার গড়ে তোলা হয়েছে।
সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর ও কুলাউড়া স্টেশনে দেখা যায়—রেলওয়ের জমিতে সারি সারি দোকানপাট, পাকা স্থাপনা ও ভাড়ায় দেওয়া ঘর-বাড়ি। শহরসংলগ্ন বাণিজ্যিক এলাকাগুলোয় এসব দখলদাররা দীর্ঘদিন ধরে কোটি টাকার সম্পদ ভোগ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানান, শ্রীমঙ্গল ও শমশের নগরের রেলজমির দাম প্রতি শতকে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। হাজার কোটি টাকার এই সম্পদ দীর্ঘদিন ধরে দখলদাররা অবাধে ভোগ করলেও রেলওয়ে তেমন কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না। মাঝে মাঝে অভিযান হলেও কয়েকদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
শমশেরনগরের বাসিন্দা, সুলতান আহমেদ বলেন, ‘এখানে জমির দাম সবচেয়ে বেশি। বহুদিন ধরে এসব জায়গা অনেকে দখলে রেখেছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তেমন ব্যবস্থা নেয় না।’
রেলের জমির ওপর স্থাপনা নির্মাণকারী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘বহু বছর ধরে লিজে জায়গা ভোগ করায় স্থাপনা করেছি।’
এ বিষয়ে কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার রুমান আহমেদ ও শ্রীমঙ্গল স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘ভূ-সম্পত্তি বিভাগ এসব দেখভাল করে। দখল হওয়া রেলজমি দ্রুত উদ্ধারের প্রয়োজন।’
২৬ নম্বর কুলাউড়া কাচারির আমিন এস এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রেলওয়ে কখনোই ৯৯ বছরের লিজ দেয় না। পাকা দালান বা কৃষিজমিতে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতিও নেই।’
সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর ও কুলাউড়া স্টেশনে দেখা যায়—রেলওয়ের জমিতে সারি সারি স্থাপনা, দোকানপাট ও ভাড়া দেয়া পাকা ঘর। শহরসংলগ্ন বাণিজ্যিক এসব স্থানের কারণে দখলদাররা কোটি টাকার সম্পদ ভোগ করছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপপরিচালক (ভূ-সম্পত্তি) কাজী ওয়ালি-উল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেয়া হবে।’



